যুক্তরাজ্যে ৪৪ বছর পর চাকরীচ্যুত হলেন স্প্যানিশ মহিলা
গত ৪৪ বছর যাবৎ কর্মরত জনৈক স্পেনিশ মহিলাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে তার কাজ করার যোগ্যতা প্রমাণ করতে না পারার দায়ে। উক্ত মহিলা একটি কেয়ার হোমে কর্মরত ছিলেন। ব্রেক্সিট পরবর্তী কাজ করার অধিকার সংক্রান্ত বিধিকে ব্যবহার করে নিয়োগদাতারা প্রায়ই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের সাথে এমন আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। ৪৫ বছর বয়সী এই মহিলা তার ১১ মাস বয়সের সময় ব্রিটেনে আসেন। এরপর তিনি কখনো দেশটি ত্যাগ করেননি।
তিনি জানান, তিনি গত ৩ সপ্তাহ ধরে ১০০ বারেরও বেশি হোম অফিস পরিচালিত হেল্পলাইনে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কখনো তাদের একজন পরামর্শকের সাথে কথা বলতে সক্ষম হননি। তিনি ইইউ সেটেলমেন্ট স্ট্যাটাসের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু তার আবেদনপত্র হোম অফিসের প্রক্রিয়াধীন ৫ লাখ কেসের জটাজালে আটকা পড়েছে। তিনি তার দুই সন্তান ও তার নিজের জীবিকা উপার্জনকারী। এখন চাকুরী হারিয়ে খাদ্য জোগাড় করা তার পক্ষে মুশকিল হবে।
ইইউ নাগরিকদের সহায়তাকারী চ্যারিটিসমূহ বলেছে, তার মামলাটি অনন্য। ওয়ার্ক রাইটস সেন্টার-এর সিইও অলিভিয়া ভিকল বলেন, আমরা এখন প্রায়ই দেখতে পাচ্ছি যেসব লোকের ইইউএসএস আবেদন ঝুলে আছে, তাদেরকে বিনা বেতনে ছুটি নেয়ার জন্য বলা হচ্ছে কিংবা চাকুরী থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে।
উক্ত স্প্যানিশ মহিলা বলেন, আমি বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে এসেছিলাম, তারা এটা প্রমাণ করতে আমাকে বলে। আমি একটি লরির পেছনে বসে এসেছিলাম বলে আমাকে যেনো অভিযুক্ত করতে চাইছিলো, অথচ আমি যখন এখানে আসি, তখন শিশু ছিলাম।
তারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো, আমি কি এমন প্রমাণ দিতে পারি যে, যুক্তরাজ্যে আমার কাজ করার অধিকার আছে। আমি প্রায় ৩০ বছর যাবৎ ট্যাক্স ও জাতীয় বীমা পরিশোধ করে আসছি। আমি অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আমি অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি।
এই সাক্ষাতের পর উক্ত মহিলা ৩০ জুন তারিখে ইইউ সেটেলমেন্ট স্ট্যাটাসের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তিনি কোন ব্রিটিশ কিংবা স্পেনিশ পাসপোর্ট পাননি। তিনি বলেন, আমার স্বামী ও ২ সন্তান ব্রিটিশ। এদেশে কখনো আমার কোন সমস্যা হবে, এটা আমি কখনো ভাবিনি।