এনএইচএস স্বাস্থ্য সেবায় শীর্ষস্থান হারিয়ে চতুর্থ
যুক্তরাজ্যের এনএইচএস বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার শীর্ষ স্থানটি হারিয়েছে। নেমে এসেছে চতুর্থ স্থানে। একটি প্রভাবশালী ইউএস থিংক ট্যাংক কর্তৃক পরিচালিত সমীক্ষায় এটা প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি ১১ টি ধনী দেশের মধ্যে পরিচালিত হয় এই সমীক্ষা বা জরিপ। পরিচালনা করে কমনওয়েলথ ফান্ডিং। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস এবং অস্ট্রেলিয়া। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যের অবস্থান ছিলো শীর্ষে।
অপর দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ, যদিও এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে থাকে দেশটি। ওয়াশিংটন ভিত্তিক সংস্থা কমনওয়েলথ ফান্ডিং, এনএইচএস-এর এই অধঃপতনের জন্য সেবা পেতে রোগীদের বিলম্ব, স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগের অভাব ও দারিদ্র্যকে দায়ী করেছে।
যুক্তরাজ্যের নেতৃস্থানীয় হেলথ থিংক ট্যাংক ‘কিংস ফান্ড’-এর প্রধান বিশ্লেষক সিভার আনন্দ সিভা বলেন, এই রিপোর্ট অনুযায়ী, আমাদের পূর্বতন বিশ্বসেরা স্বাস্থ্যসেবা তালিকার মাঝামাঝি নেমে যাওয়ার উপক্রম। আর সেজন্য প্রধানত দায়ী লোকজনের দ্রুত সেবা লাভের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান বিলম্ব।
রোগী ও সেবাসমূহের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব যখন প্রকট, তখন আমরা এটাকে মুছে ফেলতে পারছি না। অবশ্য কভিডের আগেই, এক যুগ ধরে তহবিল বরাদ্দে স্থবিরতা এবং ক্রমবর্ধমান লোকবল সংকটের দরুন চিকিৎসার জন্য অপেক্ষমান তালিকা দীর্ঘ হয়ে পড়েছিলো। এ অবস্থায় কোভিড এনএইচএস’কে নজিরবিহীন চাপের মধ্যে ফেলেছে, এনএইচএস-এর রুটিন সেবার জন্য অপেক্ষমানের তালিকা ২০০০ সালের পর থেকে স্ফীত হয়ে ওঠেছে।
যখন এনএইচএস সেবা কার্যক্রম সচল রাখা, হাসপাতাল মানসিক স্বাস্থ্য ও জিপি সার্ভিসসমূহের জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে অর্থাৎ গোটা স্বাস্থ্য ও সেবা সিস্টেম এখন ক্ষমতার ঘাটতির সম্মুখীন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, যখন ২০১৭ সালে ব্রিটেনের ৭৮% বাসিন্দা বলেছিলেন যে, তাদের নিয়মিত চিকিৎসকেরা সবসময় অথবা যখন তারা সাক্ষাৎ করেন তখন তাদের খোঁজ খবর নেন, এখন তাদের ৬৫ শতাংশ এমনটি করেন বলে জানিয়েছেন।
একইভাবে ঐবছর ৫৭ শতাংশ লোক বলেছিলেন যে, স্বাস্থ্য সেবার জন্য সর্বশেষ উপস্থিতির একই দিন বা পরের দিনই তারা ডাক্তার দেখাতে সক্ষম হয়েছেন, এখন এদের সংখ্যা নেমে এসেছে ৫২ শতাংশে। এছাড়া ঐসময় ৩৩ শতাংশ রোগী বলেছিলেন, তারা যখনই কোনো বিশেষজ্ঞের কাছে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে পরামর্শ চেয়েছেন, তখনই তা পেয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের অবস্থান এখন ১১টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ । শুধুমাত্র ফ্রান্সের চেয়ে এগিয়ে আছে দেশটি।