আফসানা বেগমের দুর্ভোগ টাওয়ার হ্যামলেটস’র জন্য বুমেরাং
এটা যেনো গত বছর শিকাগোতে ঘটে যাওয়া জন গ্রিশামের উপন্যাসের কাহিনী। ব্রিটেনের প্রথম হিজাব পরিহিতা এমপি আফসানা বেগম গত সপ্তাহে হাউজিং প্রতারণার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। অব্যাহতি পেয়েছেন সেই সব অভিযোগ থেকে, যা এনেছে তার নিজের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল। অভিযোগ আনেন আফসানা বেগমের প্রাক্তন স্বামীর শ্যালক, যখন আফসানার স্বামী নিজে একজন কাউন্সিলরের মতো রাজনৈতিক পজিশনে অবস্থান করছেন।
জুরি আফসানা বেগমের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগের ক্ষেত্রে তাকে নির্দোষ হিসেবে দেখতে পান। তাকে যাঁরা অপছন্দ করেন তাদের দৃষ্টিতে তার আসল অপরাধ হয়তো, তিনি একজন বাম ধারার মুসলিম নারী এমপি।
কাউন্সিলের অভিযোগ ছিলো, আফসানা বেগম ভিড় এড়িয়ে সোশ্যাল হাউজিং পেতে মিথ্যাচার করেন, যার ফলে করদাতাদের ৬৪ হাজার পাউন্ড গচ্ছা দিতে হয়েছে। এটা জানা যায়নি যে, এই মামলায় টাওয়ার হ্যামলেটস জনগণের কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে। তবে এ অংক অনেকগুলো ১০ হাজার পাউন্ড হওয়া বিস্ময়ের কিছু নয়। এখন অবশ্যই এ প্রশ্নসমূহ জিজ্ঞাসিত হওয়া দরকার, কাউন্সিল কেনো আফসানা বেগমের বিরুদ্ধে আগ বাড়িয়ে মামলা করতে গেলো?
বেগমের কাহিনী জটিল। ২০১৯ সালে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়, যা মিডিয়ায় উপস্থাপন করা হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেন যে, তার মায়ের বাড়িতে ৪টি বেডরুম,৩টি নয়, এবং আফসানা সোশ্যাল হাউজিংয়ের অগ্রাধিকার পাবার জন্য তাদেরকে বিষয়টি অবগত করেননি। অথচ এসময়ে তিনি পারিবারিক ঝামেলার মধ্যে সময় পার করছিলেন। গত ২ বছর তিনি ইসলামোফোবিক নিপীড়ন ও মৃত্যুর হুমকির মধ্যে ছিলেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া হচ্ছিলো।
প্রশ্ন হচ্ছে, স্থানীয় ব্যুরোক্র্যাটরা কারাদণ্ড হয় এমন অপরাধ দূরে থাক, জরিমানা করা যায়, এমন দায়িত্ব পালনে রাজনীতিকদের হস্তক্ষেপ থেকে কি মুক্ত? অন্ততপক্ষে গুরুতর অপরাধগুলো পুলিশ ও সিপিএস-এর উপর ছেড়ে দেয়া হোক। আফসানার ক্ষেত্রে বলা যায়, তিনি ২০১৯ সালে তার ইস্টএন্ড আসনে লেবার পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পান এবং হাউস অব কমন্স-এ অরক্ষিত লোকজনের পক্ষে সবচেয়ে সাহসী ও স্পষ্টভাষী বক্তা হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন।