আফগানিস্তানে তালেবান শাসন

মার্কিন ব্যর্থতার কী প্রভাব পড়তে পারে বিশ্বে

মার্কিন সেনা প্রত্যাহার, তালিবানের পুনরায় উত্থান, আফগান প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগ এবং কাবুলের পতন। এর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তোড়জোড়। এই আবহে উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে একটা উদ্বেগের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে কাবুলের পতন হল, এবার তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের কী হবে?
কারণ আফগানিস্তানকে জুড়ে রয়েছে মরক্কো, পাকিস্তান, তুরস্ক, উপসাগর এবং উত্তর আফ্রিকার কিছু অংশ। তাই মার্কিন প্রশাসনের এহেন ব্যর্থতার প্রভাব পড়বে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার প্রতি কোণে। শুধু ওয়াশিংটন নয়, ইউএস সহযোগী ন্যাটো গোষ্ঠী এবং অস্ট্রেলিয়ার উপরেও এই ব্যর্থতার প্রভাব পড়ব। আগে-পিছে না ভেবে আফগানিস্তান প্রশ্নে অস্ট্রেলিয়ার মার্কিন প্রশাসনকে সাহায্য এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে।

তাহলে কি ৪৬ বছর আগে যেভাবে সাইগন থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছিল আমেরিকা, তার প্রতিফলন এখন কাবুলে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে তুলনামূলক ভাবে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কিছুটা উদ্বেগজনক। কারণ তালিবান উত্থানের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিরতা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
১৯৭৫-এর দক্ষিণ ভিয়েতনামি সেনার পরাজয় ইন্দো-চীনের পড়শি দেশগুলোকে উন্নয়নের দিকে টানতে পেরেছিল। কিন্তু সেই পরাজয়ের প্রতিফলন ছিল সুদুরপ্রসারী। কিন্তু আফগানিস্তানের চিত্র ভিন্ন। ভিয়েতনামে মার্কিন সেনার গ্রহণযোগ্যতা এবং আত্মবিশ্বাসে আঘাত লেগেছিল। কিন্তু পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় মার্কিন সেনার দাপট ছিল। কারণ ততদিনে চীন বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন, প্রশাসনিক এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়বে।
এই আবহেই আবার চীন এবং রাশিয়া বিশ্বের কাছে আমেরিকার অবস্থান পানি মাপছে। পাশাপাশি চীন এবং তুরস্ক চাইছে আমেরিকার ফাঁকা জায়গা পূরণে এগিয়ে আসতে। বেজিং এবং মস্কো, নিজেদের কারণেই আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগ্রহী। কারণ চীনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করেছে আফগানিস্তান। তার বাইরেও চীনের অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়ার জন্য ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। আফগানিস্তানের মৌলবাদ সে দেশের মুসলিম জনসংখ্যাকে প্রভাবিত করছে। যার প্রভাব কিছুটা হলেও মস্কোকে ভুগতে হতে পারে।
সম্প্রতি চীনের বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং হি তালিবানের রাজনৈতিক প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদরের সঙ্গে ঢাকঢোল পিটিয়ে বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান, তালিবানকে প্রকাশ্যে এবং গোপনে সাহায্য করে গিয়েছে বলে মনে করে অনেকে। এখন তাই ইসলামাবাদ চেষ্টা করবে মার্কিনীদের বিড়ম্বনাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদরে প্রভাব বাড়াতে। কারণ পাকিস্তানের পিছনে রয়েছে চীনের পরোক্ষ মদদ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button