রানির শেষকৃত্যের পরিকল্পনা ফাঁস, অস্বস্তিতে ব্রিটিশ প্রশাসন
বয়স ৯৫ হলেও এখনও যথেষ্ট সুস্থ রয়েছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সাম্প্রতিক কালে রাজপরিবারের তরফে তার অসুস্থতার কোনও খবরও শোনা যায়নি। তবু তার শেষকৃত্যের নিখুঁত পরিকল্পনা সেরে রেখেছে ব্রিটিশ প্রশাসন। শুক্রবার সেই খবর ফাঁস হয়ে যায় ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমে। গোপনীয় খবর এ ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সপ্তাহান্তে বালমোরাল প্রাসাদে গিয়ে রানির সঙ্গে দেখা করে তিনি ক্ষমা চাইতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। কে এই তথ্য ফাঁস করেছেন, খোঁজে নেমেছেন তদন্তকারীরা।
পলিটিকো নামে একটি রাজনৈতিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে ওই রিপোর্ট। তাতে জানা গিয়েছে, রানির মৃত্যু দিনের সাঙ্কেতিক নাম ‘ডি ডে’। পুরো পরিকল্পনাটির নাম, ‘অপারেশন লন্ডন ব্রিজ’। রানির মৃত্যুর খবর প্রথমেই যারা পাবেন তাদের অন্যতম হলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। রানির ব্যক্তিগত সচিব ফোনে তাকে মৃত্যুর খবর জানাবেন। সরকারি তরফে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে সেই বার্তা জনসমক্ষে ঘোষণা করবেন। মন্ত্রীদের ফোন করে এবং রাজনীতিবিদদের ই-মেইল পাঠিয়ে জানানো হবে মৃত্যুর খবর। ফাঁস হয়ে গিয়েছে সেই মেইলের কথাও।
শুধু প্রধানমন্ত্রী বা প্রশাসনের ভূমিকা নয়, রাজপরিবারের সদস্যদের কর্তব্য-করণীয়ও বলা হয়েছে তাতে। রানির মৃত্যুর পরেই পরবর্তী রাজা হিসেবে চার্লসের নাম ঘোষণা করা হবে। সে দিনই সন্ধে ছ’টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন নতুন রাজা। মৃত্যুর খবর পাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে সমস্ত সরকারি দফতরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। গান স্যালুট দিয়ে সম্মান জানাবে প্রতিরক্ষা দফতর। রানির মৃত্যুর অন্তত ১০ দিন পরে তাকে সমাধিস্থ করা হবে। শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানের দিনটিকে জাতীয় শোক ঘোষণা করা হবে। এই ১০ দিন ধরে বন্ধ থাকবে পার্লামেন্টের সমস্ত কাজকর্ম। এই সময় জুড়ে পালন করা হবে নানা-আচারবিধি।
প্রথম তিন দিন শবাধার পার্লামেন্টে রাখা থাকবে। মন্ত্রিসভার সদস্যেরা সেখানেই তাকে শ্রদ্ধা জানাবেন। এই সময়ের মধ্যেই দেশ জুড়ে বিশেষ সফরে যাবেন নতুন রাজা চার্লস। ফিরে এসে অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দেবেন তিনি। তিন দিন পরে শবাধার ফিরিয়ে আনা হবে বাকিংহাম প্রাসাদে। মৃত্যুর ষষ্ঠ দিনে হবে অন্ত্যেষ্টির মহড়া। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে রানির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। উইনসর প্রাসাদে তার বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের পাশে সমাধিস্থ করা হবে রানিকে। তবে এই অনুষ্ঠানসূচি পুরোটাই নির্ভর করছে কোথায় ও কখন রানি মারা যাবেন, তার উপরে। প্রশাসনের অনুমান, রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে লন্ডনে লাখ লাখ মানুষের ভিড় হতে পারে। তাতে আচমকা বিশৃঙ্খলা, এমনকি সাময়িক খাদ্যসঙ্কটের আশঙ্কাও রয়েছে।