পাচারের শিকারদের থাকার অনুমতি দিতে ব্রিটিশ হাইকোর্টের নির্দেশ

সম্প্রতি ব্রিটিশ হাইকোর্ট এক যুগান্তকারী রায়ে বলেছেন, হাজারো মানব পাচারের শিকার ব্যক্তি, যারা অভিবাসন পদ্ধতির কারণে বছরের পর বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন, তাদেরকে থাকার অনুমতি দেয়া উচিত। রুলিংয়ের পূর্বে যে সব লোককে যুক্তরাজ্য সরকার বিদেশী মানব পাচারের শিকার বলে গ্রহন করেছিলো, তাদেরকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারতো, যেখানে তারা একই অপরাধীগন কর্তৃক আবার পাচার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তো। এ কারনে অনেকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় কিংবা মানবতাবাদী সুরক্ষার জন্য দাবি জানিয়েছেন। তাদের আবেদন হোম অফিস কিংবা আদালত কর্তৃক প্রোসেসকৃত হওয়ার পূর্বে তাদেরকে বেআইনী বিলম্বে পড়ে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হতো।
ঐ সময়ে তারা কাজ ও পড়াশোনা করতে পারেন না কিংবা মূল ধারার কোন সুযোগ সুবিধাও পাননা। অনেকে বলেন, মানব পাচার থেকে তাদের আবেগপূর্ন পুনরুদ্ধারকে ধরে রাখতে হবে, যখন তারা অপেক্ষা করবেন এবং যখন তারা তাদের জীবন নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন।
মঙ্গলবারের রুলিয়ে এই মর্মে আদেশ দেয়া হয়েছে যে, মানব পাচারের শিকার এই দলকে গণহারে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দিতে হবে, যারা এটা চেয়েছে । এটা হাজারো পাচারের শিকার হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। যদি হোম অফিস আপীল করতে চায়, তবে তাদেরকে অবশ্যই ১৯ অক্টোবরের মধ্যে অনুমতি চেয়ে একটি আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩৩ বছর বয়সী জনৈক ভিয়েতনামী নারী হোম অফিসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি আইনী চ্যালেঞ্জের পর আদালত এই রুলিং প্রদান করেন। যুক্তরাজ্যে পাচারকৃত হওয়ার আগে এই নারীকে ২০১৬ সালে প্রায় ৬ মাস ভিয়েতনামের ভিন সিটিতে যৌনকর্ম করতে বাধ্য করে পাচারকারীরা। পরে ২০১৬ সালের নভেম্বরে একটি লরীর পেছনে বসে যুক্তরাজ্যে এসে পৌছার আগে তাকে রাশিয়া, ইউক্রেন ও ফ্রান্সসহ অনেকগুলো দেশ পেরিয়ে আসতে হয়।
২০১৬ সালের নভেম্বর এবং ২০১৮ সাালের মার্চে, তাকে পতিতালয়গুলোতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। বাধ্য করা হয় গাজা উৎপাদনে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পাচারের শিকার বলে স্বীকৃত হন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে গাজা উৎপাদনের চক্রান্তের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। প্রেস্টন ক্রাউন আদালতে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তাকে ২৮ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। পরে তিনি আশ্রয়ের জন্য আপীল করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে অবতীর্ন হন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button