প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্টের নির্বাচন ২১ নভেম্বর

আরিফ রব্বানী: যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী কমিউনিটির সর্ববৃহৎ এবং অন্যতম প্রাচীন সামাজিক সংগঠন প্রবাসী বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্টের নির্বাহী পরিষদের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনী তফসিল (২০২১-২০২৪) ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২১ নভেম্বর রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত পূর্ব লন্ডনের অ্যানজাইন ইয়ুথ ক্লাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৮ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেলের মায়েদাগ্রীল রেস্টুরেন্টে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

৩ হাজার ৬শ ট্রাস্টি আর ১৪ কোটি টাকার বিশাল তহবিল সমৃদ্ধ কমিউনিটি এ সংগঠনটি বাংলাদেশে তাদের উপজেলায় শিক্ষা ক্ষেত্রে গত প্রায় তিনযুগ থেকে অবদান রাখছে। ১৯৯১ সালে ব্রিটেনে বসবাসরত বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর উপজেলার একদল উদ্যমী প্রবাসী ট্রাস্টটি গঠন করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ আবুল কালাম, কমিশনার ব্যারিস্টার মোঃ লুৎফুর রহমান ও কশিনার অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহজাহান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশার ব্যারিস্টার মোঃ আবুল কালাম বলেন, ৩৬০০ ট্রাস্টিদের বৃহৎ এ সংগঠনের নির্বাচন ব্রিটেনের অন্যান্য কমিউনিটি সংগঠনের চেয়ে আলাদা। কারণ এই ট্রাস্টটি যেমন বড় তাদের নির্বাচন ও বেশ জমজমাট হয়ে থাকে। সমগ্র বাড়িতে ট্রাস্টের সদস্যগণ রয়েছেন এবং নির্বাচনের দিন একে অন্যের সাথে দেখা করতে তারা মিলন মেলায় পরিণত করেন। তাই নির্বাচনের আগে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে ট্রাস্টিদের অবহিত করতে হয়।
ব্যারিস্টার আবুল কালাম বলেন, আমরা চাই সেবা মূলক এই সংগঠনটির নির্বাচনটি যাতে আন্তরিক পরিবেশে সম্পন্ন হয় আর এ জন্য সুসংগঠনের সকল ট্রাস্টির আন্তরিক সহযোগিতার পাশাপাশি মিডিয়ার সাহায্য প্রয়োজন।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩১ অক্টোবর রোববার বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ১১২-১১৬ হোয়াইটচ্যাপেল রোডে প্রার্থীদের মনোনয়ন গ্রহণ করা হবে। মনোনয়নপত্র বাচাই, প্রত্যাহার, প্রার্থীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ৫ নভেম্বর শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে ৭টার মধ্যে। নতুন ট্রাস্টি রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ ৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু লিখিত নীতিমালা অনুসরণ করবে। ট্রাস্টিবৃন্দ উক্ত নীতিমাল মোতাবেক নির্বাচন পরিচালনায় কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবেন। বৈধ পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যেক ভোটারকে ব্যালট পেপার প্রদান করা হবে।
নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীকে কমিশন বরাবরে লিখিত আবেদন করতে হবে, একই প্রতীকের জন্য একাধিক প্রার্থী আবেদন করলে লটারীর মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন যেকোন ভোটারের পরিচয়পত্র ঠিকানা যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনে ভোট প্রয়োগ থেকে বিরত রাখতে পারবেন।
পরিচয়পত্র হিসাবে প্রত্যেক ট্রাস্টিকে অবশ্যই পাসপোর্ট, ফটোসহ ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা ট্রাস্ট কর্তৃক প্রদত্ত আইডি কার্ড এবং সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ফ্রিডম পাস প্রদর্শন করতে হবে। যে সকল ট্রাস্টির পাসপোর্ট হোম অফিসে জমা এবং হোম অফিসের বিবেচনাধীন, তারা অবশ্যই হোম অফিস কর্তৃক প্রদত্ত ফটোসহ আই.এস.৯৬ ডকুমেন্ট সহ যে কোন একটি ঠিকানা সম্বলিত আইডি দেখিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
কোনও প্রার্থী, এজেন্ট বা দলীয় সাপোর্টার বর্ণিত তফশীলের বাইরে নিজস্ব কোন মতামত প্রদান বা প্রয়োগ করতে পারবেন না। নির্বাচনী কেন্দ্রের ভিতরে বা বাইরে নির্বাচনী প্রচারনা বা প্ররোচনা প্রদান করতে পারবেন না। জাল ভোট প্রদান বা প্ররোচিত করা নির্বাচনী তফশীল মোতাবেক অপরাধ হিসাবে গন্য করা হবে। এমন অপরাধী বা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে কেন্দ্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যেতে পারে। ভোট গণনার সময় শুধুমাত্র প্রার্থীর এজেন্ট ও প্যানেল প্রধান উপস্থিত থাকতে পারবেন। প্রত্যেক প্রার্থীর একটি করে ভোট গণনা করা হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর প্রত্যেক প্যানেল থেকে একজন করে সমন্বয়ক বা প্রতিনিধির নাম নির্বাচন কমিশন বরাবরে দাখিল করতে হবে। যদি কোনও বিষয় নির্বাচন কমিশনকে অবগত করতে হয় অথবা যদি কোনও প্রস্তাব থাকে তাহলে সমন্বয়ক কর্তৃক লিখিতভাবে প্রদান করতে হবে।
ট্রাস্টিবৃন্দের সহযোগিতায় নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধ পরিকর। নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রার্থী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে কোনো কার্যকলাপের মাধ্যমে নির্বাচনী কাজে বাধা সৃষ্টি করলে তা নির্বাচনী আচরনবিধির পরিপন্থী বলে গণ্য হবে। আচরণ বিধি লংঘনকারী প্রার্থী বা তার সমর্থিত প্রার্থীকে কমিশন সতর্ক করতে পারবেন এমন কি তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাতিল ঘোষণা করতে পারবেন।
কোনো প্রার্থী মনোনয়োনপত্র প্রত্যাহার করতে চাইলে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত আবেদন করতে হবে।
ঐতিহ্যবাহী এই ট্রাস্টের সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন যেকোনো বিষয়ে প্রয়োজনীয় যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button