ব্রিটেনে বিনা নোটিশে নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার বিল
প্রস্তাবিত নতুন বিলের অধীনে যে কোন ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব নীরবে কেড়ে নিতে পারবে সরকার। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কোন নোটিশ প্রদানের প্রয়োজন হবে না। প্রস্তাবিত রুলের এই পরিবর্তন ‘ন্যাশনালিটি এন্ড বর্ডার’ বিলে সংযোজন করা হয়েছে।
‘ন্যাশনালিটি এন্ড বর্ডার’ বিলের ৯ নং অনুচ্ছেদে কোন ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার পূর্বে তাকে নোটিশ দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এই বিধিটি চলতি মাসের শুরুতে হালনাগদ অর্থ্যাৎ পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি যৌক্তিকভাবে কার্যকরযোগ্য না হলে কিংবা এক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা, কূটনৈতিক সম্পর্ক কিংবা অন্য কোনভাবে জনগনের স্বার্থ জড়িত হলে কোন নোটিশ ছাড়াই যে কোন নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারবে হোম অফিস।
এর সমালোচনাকারীরা বলেন, ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া ব্রিটিশ স্কুল শিক্ষার্থী শামিমা বেগমের মামলাটি ইতোমধ্যে একটি ‘কনটেনশাস পাওয়ার’ বা বিতর্কিত ব্যাপার। এ অবস্থায় নোটিশ প্রদানের বিধান বাতিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমতাকে অধিকতর স্বেচ্ছাচারী করে তুলবে।
রেইস রিলেশন্স- এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিস ওয়েবার বলেন, এই সংশোধনী এই বার্তাই দিচ্ছে যে, কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহন করলেও এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলেও এবং তাদের অন্য কোন বাড়ি না থাকলেও এদেশে অভিবাসী হয়ে থাকতে হবে। তাদের নাগরিকত্ব এবং সেই হিসেবে তাদের সকল অধিকার নাজুক ও ঘটনা সাপেক্ষ।
তিনি আরো বলেন, এটা পূর্বের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে, যা ব্রিটেনে জন্ম গ্রহণকারী দ্বৈত নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিলে ব্যবহৃত হতো (যাদের অধিকাংশ ছিলো নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘু)। এটা মূলত: ব্রিটিশ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতো। এটা অনুশোচনাবিহীনভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শোভনীয়তার মৌলিক রীতি-নীতিকে অবজ্ঞা করছে।
ব্রিটিশ নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিলের আইনটি চালু হয় ২০০৫ সালে লন্ডনে বোমা বিস্ফোরনের পর। তবে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পায় থেরেসা মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে, ২০১০ সাল থেকে। ২০১৪ সালে এটাকে আরো বিস্তৃত করা হয়।
২০১৮ সালে নোটিশ প্রদানের আবশ্যকীয়তা দুর্বল হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে হোম অফিস কর্তৃক শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফাইলে নোটিশ রেখে নোটিশ জারির বিধান বলবৎ রাখা হয়। বর্তমানে প্রস্তাবিত বিধির পরিবর্তে এটাও বিলুপ্ত হতে চলেছে।