প্রস্তুত বাটারসি পার্ক

সতেরোতম ক্যারী অস্কারের পর্দা উঠছে ২৯ নভেম্বর

মাল্টি কালচারের নগর খ্যাত লন্ডন উৎসব আর অনুষ্ঠানের জন্য ব্রিটিশদের কাছে সব সময় পছন্দের স্থান। নানা অনুষ্ঠান আর উৎসবের আয়োজনে এ নগরীর সুনাম বিশ্বময়। লোকজন এখানে অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকে তার প্রিয় অনুষ্ঠানটি জন্য। আর সে অনুষ্ঠান যদি অস্কার খ্যাত মর্যাদার হয় তা হলে সেটার জন্য অপেক্ষার মাত্রাও থাকে ভিন্ন। এবারও ব্রিটিশদের কাছে এর ব্যতিক্রম নয়।
ব্রিটেনের ক্যারী শিল্পের অস্কার খ্যাত ‘ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ডস ২০২১’ এর জন্য অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে আগামী ২৯ নভেম্বর সোমবার। ঐ দিন সন্ধ্যায় সেন্ট্রাল লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী বাটারসি এভুলেশন পার্কে পর্দা উঠছে ক্যারী অস্কারের। ইভেন্ট প্রেমীদের কাছে বছরের সেরা এ আয়োজন থাকে অনেকটা সারপ্রাইজ। দেশ সেরা এ আয়োজনে উপস্থিত হন বিশ্বখ্যাত সব সেলিব্রেটিরা। ভিন্ন মাত্রার শিল্প বিকাশে ব্রিটেনে বাংলাদেশীদের অসাধারণ ক্যারী শিল্পের বিকাশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এ আয়োজনকে গ্রেট ব্রিটেনের রাণী থেকে শুরু করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীরা বলেছেন একটি শিল্প জনপ্রিয় করতে এমন আয়োজন শুধু সেরা নয় এটি অনন্য। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন বলেছিলেন, “চিকেন টিক্কা আমাদের প্রিয় খাবার। ক্যারি বিহীন একটি সপ্তাহও কল্পনা করতে পারেনা ব্রিটিশ নাগরিকরা। পুষ্টিকর ও খাদ্যের অসাধারণ গুনগত মানসম্পন্ন এ খাবার যারা পরিবেশন করেন তারা সেরা ব্রিটিশ।” সাবেক এ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ ক্যারী এওয়ার্ডস আর আয়োজনে মুগ্ধ হয়ে আরো বলেছিলেন,এমন আয়োজন ক্যারী শিল্পের বিকাশে মাইলফলক এবং ব্রিটিশদের জন্য অস্কার।
গত প্রায় দু’বছর বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনটি ভার্চুয়ালী অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেখানেও ছিল ভিন্নমাত্রা ক্যারী শিল্পের বিকাশের পাশপাশি যারা মানবতার কল্যানে মহামারীতে অবদান রেখেছিলেন তাদের সম্মানীত করা হয় করোনাকালীন ক্যারী এওয়ার্ডে।

বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রায় দু’বছর পর এবারের ক্যারী অস্কার ও সাজানো হয়েছে ভিন্নমাত্রায়। ব্রিটেনের জাতীয় রাজস্ব আয়ের বিলিয়ন পাউন্ডের বিশাল অংশীদার যে ক্যারী শিল্প সেই শিল্পের অস্কার খ্যাত অনুষ্ঠানের মর্যাদা তুলে ধরতে বরাবরের মতোই আয়োজনে ভিন্নতা দিয়ে দিয়েই সাজানো হয়েছে ১৭ তম ক্যারী অস্কারের জমকালো আয়োজনকে।
প্রায় দু’বছর পর পৃথিবীব্যাপী করোনার ভয়াবহতা কাঠিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পর এবারের আয়োজনে ভিন্নতা থাকবে এমনটি ইঙ্গিত করেছেন অস্কার খ্যাত ক্যারী এওয়ার্ডের জনক এনাম আলী এমবিই। এনাম আলী এমবিই বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষেরা ব্যবসাকে অর্থনৈতিক উন্নতির পথ হিসেবে না দেখে এর মাধ্যমে ব্রিটেনের মাল্টিকালচারাল কমিউনিটিতে ভালোবাসার যে সেতু বন্ধন তৈরী করে গেছেন এর বাস্তব রূপ আজকের ক্যারী ছাড়া তারা এক সপ্তাহও কল্পনা করতে পারে না। ক্যারী ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে ব্রিটেনের জাতীয় বাজেটে আমরা আজ অবদান রাখছি কিন্তু এ শিল্পের প্রকৃত বিকাশে আমাদের অবদান আরো শানিত হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, পৃথিবী পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর সাথে সম্পৃক্ত করতে তাদের সময়ের ভিন্নতায় পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। আমাদের শেকড় থাকবে সেই সাথে শিল্পের বিকাশে যোগোপযোগী উদ্যোগও নিতে হবে। ব্রিটিশ ক্যারী অ্যাওয়ার্ড এর মাধ্যমে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ক্যারী শিল্পের বিকাশে বাবার নিরন্তন প্রচেষ্টা যারা জন্মের পর থেকে দেখছে সেই এনাম আলী এমবিই কন্যা জাস্টিন আলীর প্রযোজনা ও তরুণ ব্যবসায়ী জেফরী আলীর সহ-প্রযোজনায় অনুষ্ঠানে এবারও বসবে মিডিয়া, শিল্প, সাহিত্য, রাজনীতিসহ ব্রিটেনের মূলধারার নানা পেশায় সফল সেলিব্রেটিদের মিলন মেলা। পৃথিবীর সাথে করোনার ভয়াল থাবায় থমকে যাওয়া ব্রিটেনের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পর এ আয়োজনেও ফুঠে উঠবে উৎসবের বর্ণিল আমেজ। প্রায় দু হাজারের মত আমন্ত্রিত অথিতির উপস্থিতিতে বাটারসি পার্ক ফিরে পাবে তার পুরানো পরিচয়।
মূলধারার শিল্পীদের পরিবেশনায় ক্যারী অস্কারের এ আয়োজনে বরাবরই তুলে ধরা হয় বাঙালীর নিজস্ব সংস্কৃতির নানা দিক। শেকড়ের সাথে নিজের জাতিকে এখানেও পরিচয় করিয়ে দিতে প্রয়াস চালান একজন একজন ইভেন্ট মাস্টার এনাম আলী।
সাবেক ব্রিটিশ শিক্ষামন্ত্রী নিকি মর্গানের ভাষায়,’বাংলাদেশীদের ক্যারী আজ ব্রিটিশ হাউসহোল্ড ব্র্যান্ড। বিশ্বময় এখন সেটি রপ্তানী হওয়ার পাশাপাশি ব্রিটেনের জাতীয় অর্থনীতিতে যোগান দিচ্ছে বিলিয়ন পাউন্ড রাজস্ব। এর মাধ্যমে সুদৃঢ় হচ্ছে আমাদের অর্থনীতি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button