মহামারির পর লন্ডনের তরুণ যুবাদের চাকুরী সংকট
কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে লন্ডনে তরুণ যুবাদের বেকারত্ব ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার। এ অবস্থায় ২১ শতাংশ তরুণ যুবা চাকুরীহীন অবস্থায় চাকুরীর অনুসন্ধান করছে। ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড ও দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত এক অনুসন্ধানে এটা প্রকাশিত হয়েছে। এটা সকল বয়সীদের সামগ্রিক ৪.৩ শতাংশ জাতীয় বেকারত্বের ৫ গুণ বেশী। তরুণদের মধ্যে তা অনেক বেশী।
লন্ডনে প্রতি ৪ জনে ১ জন ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণী বেকার। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স অনুসারে এ তথ্য প্রদত্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস-এর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। লন্ডনের পরেই এর অবস্থান অর্থাৎ বেকারত্বের হার ১৫ শতাংশ। আর স্কটল্যান্ডে কমপক্ষে ৯ শতাংশ। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় এই যে, দেশব্যাপী ৪২ শতাংশ তরুণ যুবা ৬ মাস বা এর চেয়ে বেশী সময় যাবৎ কর্মহীন। যা তাদের আশা -ভরসা ও আত্মমর্যাদাকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এসব পরিসংখ্যান সরকারের ২ বিলিয়ন পাউন্ডের কিকস্টার্ট স্কীমের ব্যর্থতার প্রকাশ, যা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে চালু করা হয়।
এক দ্বারা সর্বনিম্ন মজুরীতে ২৫ বছরের কম বয়সীদের নিয়োজিত করতে চাকুরীদাতাদের ইউনিভার্সেল ক্রেডিটভিত্তিক ফান্ড প্রদান করা হয়। কিন্তু এতে লক্ষ্যমাত্রার আড়াই লাখ পদের মধ্যে মাত্র ৯৬ হাজার ৭’শ পদ পূর্ণ করা সম্ভব হয়। স্কীমটি দুর্বল পরিকল্পনার দরুণ ব্যর্থ হয়, যার ফলে ক্ষুদ্র ও মধ্যম আকৃতির ব্যবসাসমূহ অংশগ্রহণে প্রাথমিকভাবে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। দেরীতে এর সংশোধন যথেষ্ট অগ্রগতি সাধনে ব্যর্থ হয়, যার ফলে মাত্র ৪০ শতাংশ সফলতা আসে। স্কীমটি ২০২২ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
গত মাসে দেশব্যাপী জব ভ্যাকেন্সী বা পদশূন্যতা বেড়ে প্রায় ১.২ মিলিয়নে পৌঁছা সত্বেও তরুণ যুবকদের বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়। এতে অদ্ভূত অসংগতি সৃষ্টি হয়।
স্ট্র্যাটফোর্ড থেকে আগত ২৩ বছর বয়সী জনৈক যুবকের স্বপ্ন ছিলো পিতার মতো সিটি কমোডিটি ব্রোকার হওয়া। কিন্তু সে সাড়া পায়নি। এমনকি সৌজন্যমূলক একটি কল ও করা হয়নি তাকে। যে ৭ ব্যক্তি তার ইন্টারভিউ নেন, তারা তাকে জানান নি যে, তাকে নেয়া হবে না।
পাওলো নামক জনৈক যুবক আবেদন করেই যাচ্ছিলো। কলেজ ত্যাগের পর ২ বছরের প্রচেষ্টা ও ব্যর্থতা এবং কোভিড মহামারির পর থেকে বছর ব্যাপী কর্মহীনতা তাকে অনুভূতিহীন শূণ্যতায় নিক্ষেপ করে। এ অবস্থানকে সে ‘আত্মবিধ্বংসী’ বলে আখ্যায়িত করে। পাওলো ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী ১ লাখ ৫ হাজার লন্ডনের বাসিন্দার একজন, যারা বেকার হিসেবে নিবন্ধিত।