আত্মত্যাগের মহিমায় বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা

BD Eidযথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা । প্রতিবারের মতো এবারো বাংলাদেশের বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। এতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এডভোকেট, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিচারপতি, কূটনীতিক ও রাজনীতিকসহ সর্বস্তরের নাগরিকরা জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করেন । এ ছাড়াও রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এডভোকেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাণীতে তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের সুখ ও সমৃদ্ধিও কামনা করেন।
বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিনের সরকারি ছুটি। ঈদুল-আজহা উপলক্ষে দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও’তে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করা হচ্ছে।
এদিকে গ্রামের বাড়িতে আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করার জন্য লাখ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়ে গেছেন। ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআরটিসি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি), বাংলাদেশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থা বিপুলসংখ্যক যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ঈদের নামাজের পরপরই বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়ে যায় পশু কোরবানি। এর আগে মঙ্গলবার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা ঈদ উদযাপিত হয়। যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে বুধবার সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির প্রচলন। আল¯œাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানী করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়। মহান আল্লাহ পাকের প্রতি আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে।
প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে হযরত ইব্রাহিম (আ.) নিজ পুত্রকে কোরবানি দেয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। আল্লাহপাকের নির্দেশে জীবদ্দশায় হযরত ইব্রাহিম (আ.) প্রতি বছরই পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহপাকের আনুগত্যের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)ও এই আদর্শ অনুসরণ ও বহাল রাখতে আদিষ্ট হন। তিনিও তাঁর জীবদ্দশায় প্রতিবছরই কোরবানি করেছেন এবং তাঁর উম্মতদের জন্য এই আদর্শ ও প্রথা অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
সারাবিশ্বের মুসলমানের কাছে ঈদুল আজহা কোরবানির ঈদ হিসেবে পরিচিত। এদিন মুসলমানরা জামাতে নামাজ আদায় করেন এবং সাধ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, উট ইত্যাদি পশু কোরবানির মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button