কনজারভেটিভ এমপি’র দলত্যাগ
মদ পার্টির খেসারত দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
দলে বিদ্রোহের মুখে বরিস জনসন
লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গ করে মদের পার্টির আয়োজন নিয়ে দারুণ চাপে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার আচরণ ‘মর্যাদাহানিকর’ আখ্যা দিয়ে এক কনজারভেটিভ এমপি দলত্যাগ করে বিরোধীদল লেবার পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন।
ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের বুরি সাউথ থেকে নির্বাচিত ওই এমপ’র নাম ক্রিশ্চিয়ান ওয়েকফোর্ড। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনসনের নীতি তার এলাকার লোকজনের কোনও উপকারেই আসছে না। যে কারণে তিনি প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন।
২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মত এমপি নির্বাচিত হওয়া একজন ওয়েকফোর্ড। জনসনের মদেরপার্টি কাণ্ড নিয়ে তার দলের যারা তীব্র সমালোচনা করেছেন তাদের মধ্যে ওয়েকফোর্ডও আছেন।
কনসারভেটিভ পার্টির অন্তত ৫৪ জন আইনসভা সদস্য দলীয় কমিটির কাছে জনসনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। এই দলীয় বিদ্রোহকে বলা হচ্ছে ‘পর্ক প্লাই প্লট’। কারণ, কনসারভেটিভ পার্টির যে পার্লামেন্ট সদস্য প্রথম বিদ্রোহ করেছেন, তিনি রুটল্যান্ড-মেল্টনের প্রতিনিধি। আর এই জায়গাকে বলা হয় মেল্টন পর্ক পাইয়ের কেন্দ্র। অবশ্য লন্ডনে ‘পর্ক পাই’ কথাটিকে স্ল্যাং হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।
২০২০ সালের ২০ মে জনসনের কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটের বাগানে যখন মদের পার্টি চলে তখন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যুক্তরাজ্যে কঠোর লকডাউন চলছিল। ওই কাণ্ডসহ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আরও কিছু ভুলের কারণে নিজ দল থেকেই তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
জনসন তার নিজের কাজের জন্য বারবার ক্ষমা চাইছেন। কিন্তু তার ভাবমূর্তির যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। তার দলের এমপি’রা এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে ১৯২২ কমিটিকে চিঠি লেখার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন।
বুধবার পার্লামেন্টে ছিল প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার দিন। সেটা ছিল রীতিমতো উত্তপ্ত। জনসন জানান, তার ইস্তফা দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি তার সাবেক পরামর্শদাতার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। সাবেক পরামর্শদাতা ডমিনিক কামিংসের অভিযোগ ছিল, করোনাকালে পার্টি করা নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছিলেন জনসন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘নিজের মদ নিজে আনো পার্টি’ যে লকডাউনের নিয়ম ভেঙে হবে, সেকথা তাকে কেউ বলেননি।
পার্লামেন্টে বিরোধী লেবার পার্টির কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন জনসন। লেবার পার্টির নেতারা বলেছেন, প্রতি সপ্তাহে জনসন উদ্ভট ও অবাস্তব যুক্তি দিচ্ছেন। তিনি কোনোভাবেই পার্টিগেটের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না।
এদিকে, জনসন যদি সত্যিই পদত্যাগে বাধ্য হন তবে যুক্তরাজ্যকেও সংকটে পড়তে হতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গত প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে দেশটিতে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশটির জন্য সামনে হয়তো আরো অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।