বাংলাদেশ-তুরস্ক প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় উভয় দেশ লাভবান হবে
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিরক্ষাখাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি বাংলাদেশ ও তুরস্ক উভয় দেশকে আর্থিক ও সামরিক দিক দিয়ে লাভবান করবে। সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত প্রশিক্ষন গ্রহনের ক্ষেত্রে তুরস্ক বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় বিকল্প উৎস হয়ে ওঠছে।
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমরা সামরিক প্রশিক্ষন ও সরঞ্জামাদির জন্য দীর্ঘকাল যাবৎ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সহ কিছু নির্দিষ্ট দেশের ওপর নির্ভরশীল। তিনি আরো বলেন, এটা উভয় মুসলিম দেশের জন্য আর্থিক ও সামরিক দিক দিয়ে ইতিবাচক হবে।
লক্ষণীয় যে, তুরস্ক বিগত দশকব্যাপী তার প্রতিরক্ষা খাতে আধুনিকীকরন করেছে এবং অনেক ধরনের সামরিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীন উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। কাইয়ুম বলেন, তুরস্কের সাথে বিদ্যমান কূটনৈতিক সম্পর্ক ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিনিময় ও সামরিক হার্ডওয়্যার উৎপাদনে যৌথ উদ্যোগ সহ সব ধরনের সামরিক সহায়তা লাভ করতে পারে।
জনাব কাইয়ুম খান বলেন, গত ৮ জানুয়ারী তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে সামরিক প্রশিক্ষন, ইনটেলিজেন্স শেয়ারিং, কাউন্টার টেরোরিজম অপারেশন ও সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত। চুক্তির অধীনে তুরস্ক বাংলাদেশ পুলিশ ও বিজিবি, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, প্যারা মিলিটারি ফোর্স ও ভিডিপি- কে প্রয়োজন মুহূর্তে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে। বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বিভাগের একটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ ‘ডিফেন্স টেকনোলজি অব বাংলাদেশ'(ডিটিবি) কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, তুরস্কের একটি প্রধান অস্ত্র উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ও ডিফেন্স কনট্রাক্টর ‘রোকেটসান’ গত বছরের জুন মাসে বাংলাদেশে ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার টিআরজি-৩০০ কাপলান মিসাইল সিস্টেমের প্রথম ব্যাচ সরবরাহ করেছে।
২০২১ সালে তুরস্কে অনুষ্ঠিত একটি প্রশিক্ষন মহড়ায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ৪১ সদস্যের একটি টিম অংশগ্রহন করে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশসমূহের পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির অংশ হিসেবে ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ৪.৪৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা বাজেট গ্রহন করা হয়েছে।