টি-২০ বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে সিলেট চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাচ্ছে

t20গত ১৭ জুনে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নের কাজ শুরু করে তা অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন করা নিয়ে সনিন্দহান ছিল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বসত’। এমনকি আইসিসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী অক্টোবরের মধ্যে ৮৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এই আধুনিকায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে শংকা ছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ও।
বিলম্বে দরপত্র আহ্বান এবং ঠিকাদার নির্বাচন করায় আইসিসি’র নির্দেশিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা নিয়ে যে শংকা তৈরি হয়েছিল, গতকাল আইসিসি প্রতিনিধি দলের এই স্টেডিয়াম পরিদর্শনে সন্তুস্টি প্রকাশে সে শঙ্কা কেটে গেছে। ২০১৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে সিলেট চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাচ্ছে, গতকাল বিসিবি’র সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা সে তথ্য দিয়েছেন- ‘আইসিসি’র ইভেন্ট ম্যানেজার ক্রিস টেটলি কাজের এই অগ্রগতি দেখে বিস্মিত হয়েছেন। মাঠের কোথায় ডিজে বসবে, কোথায় মঞ্চের উপর হোন্ডা বসবে, তা দেখিয়ে দিয়েছে। এর পরও কি এই ভেন্যুতে টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকার কথা?’
একবার দু’বার নয়, এই নিয়ে আইসিসি’র ভেন্যু পরিদর্শক দলের সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এটি ৬ষ্ঠ সফর। আরো একবার সফর করবে তারা, এবং সেটি ২৭ অক্টোবর। স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নের সকল কাজ সম্পন্ন হবার পর। এ তথ্য দিয়েছেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বসত’ এর প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান রিপন-‘২৭ তারিখে আইসিসি’র পরিদর্শক দল এসে পুরোপুরি সন্তুস্ট হবে। আশা করছি ৩০ অক্টোবরের পর এখানে আর কোন কাজ বাকি থাকবে না।’
মাঠ অনেক আগেই প্রস্তুত করেছে বিসিবি’র গ্র্যাউন্ডস কমিটি, সিলেট ক্যাডেট কলেজ মাঠে অনুশীলন সুবিধা-সেটাও সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। অনুশীলনের জন্য সিলেট জেলা স্টেডিয়ামও প্রস্তুত। ৪ তলা গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের  নির্মান কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে যে শংকা তৈরি হয়েছিল, সেই ৪ তলা গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে এখন শুধু বাকি আছে ৪র্থ তলায় প্রেসিডেন্ট এবং আইসিসি হসপিটালিটি বক্স স্থাপন। গ্যালারি এবং টিলার সাজ সজ্জার কাজ শেষ হয়েছে, পার্কিং পয়েন্ট এর কাজ ও শেষের দিকে। বসছে গ্যালারিতে চেয়ার।  আভ্যন্তরীন সড়ক নির্মানের কাজও দ্রুত সম্পন্নের পথে।  ইতোমধ্যে ফ্লাড লাইট স্থাপন এবং বিদ্যুৎ সংযোগ এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে, চলছে জায়ান্ট স্ক্রিন স্থাপনের কাজ। সিলেটে আইসিসি পরিদর্শক দলের পরবর্তী সফরের আগেই জায়ান্ট স্ক্রিন স্থাপনের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বসতের ওই প্রকৌশলী।
গতকাল এই ভেন্যু  পরিদর্শন শেষে মিডিয়াকে ক্রিস  টেটলি কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন-‘মাঠ ও স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে, কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। আশা করছি, তা শিগগিরই শেষ হবে। এ মাসের শেষের দিকে আমরা আবারো পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিব।’
বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনামের কন্ঠেও সন্তুষ্টি- ‘গত মাসের তুলনায় কাজের অগ্রগতি অনেক ভাল এ মাসে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুর জন্য যে ধরনের অবকাঠামো প্রয়োজন তার পুরোটাই ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অল্প কিছু কাজ বাকি। মাঠ গ্রহণের জন্য আইসিসি টিম এলে, তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত মাঠ পাবে।’ আইসিসি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন টি-২০ বিশ্বকাপের আইসিসির ইভেন্ট ম্যানেজার ক্রিস টেটলি। প্রতিনিধি দলে ছিলেন, ধীরাজ মানহোত্রা, টুলস উডাস, লারা রিচার্ড, ইউজেন ভুরেন, টিলবিচ, এন্ডি ব্রুডস ও জেমস ক্যামেরুন।
আগামী ৬ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে চলমান সিরিজের একমাত্র টি-২০ ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব বলেও মনে করছেন বিসিবি’র এক নির্ভরশীল সূত্র। আইসিসি’র ভেন্যু পরিদর্শন দলের পরবর্তী সফরের সময় চলমান সিরিজের ম্যাচ রেফারীকে সংযুক্ত করে তার পক্ষ থেকে ইতিবাচক রিপোর্টের প্রত্যাশা করছে বিসিবি। আগামী ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে এবং টি-২০ সিরিজের জন্য ম্যাচ রেফারী ক্রিস ব্রড আসছেন ঢাকায়। আন্তর্জাতিক ভেন্যুর স্বীকৃতির জন্য তাকে সিলেট স্টেডিয়াম দেখানোর কথা ভাবছে বিসিবি।
এদিকে নতুন ভেন্যু সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম আইসিসি পরিদর্শক দল সরজমিন পরিদর্শন করলেও ৮ সদস্যের এ প্রতিনিধি দল এবার পরিদর্শন করেননি বিসিবি’র অর্থায়নে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে  নির্মাণাধীন স্টেডিয়াম।  টি-২০ বিশ্বকাপে মহিলাদের প্রথম পর্বের ভেন্যুর প্রি ফেব্রিকেটেড গ্যালারি এবং ড্রেসিং রুম এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে আইসিসি’র পরিদর্শক দলের পরবর্তী পরিদর্শনে থাকছে এই ভেন্যুটি। তবে এই ভেন্যু নিয়ে শংকার কিছুই দেখছেন না বিসিবি’র নির্বাচিত পরিচালক আ.জ.ম নাসির- ‘মেয়েদের ভেন্যু নিয়ে আইসিসি’র মাথাব্যথা নেই।  তেমন কোন কঠোর শর্তও নেই। আন্তর্জাতিক মানের ড্রেসিং রুম এবং ম্যাচ অফিসিয়াল রুম থাকলেই চলবে। তাই কক্সবাজার নিয়ে আমরা শংকার কিছু দেখছি না।’
ইতোমধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ ক্রিকেট মাঠ কক্সবাজারে তৈরি করেছে বিসিবি’র গ্র্যাউন্ডস কমিটি, উইকেট থেকে বাউন্ডারি রোপ পর্যন্ত ২২ ইঞ্চি স্লব নিশ্চিত করায় অল্প বৃস্টি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না ম্যাচে। সেটাই মনে করছে এই বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র।  আগামী ২ থেকে ৪ নভেম্বরে এই মাঠে সফরকারী ভারতের মধ্য প্রদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের সঙ্গে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের মধ্যে তিনদিনের ম্যাচ দিয়ে এই মাঠের অভিষেক করবে বিসিবি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button