ব্রিটেনে জীবনযাত্রার মান পঞ্চাশের দশকের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে

যুক্তরাজ্যের গৃহস্থালীসমূহের জীবনযাত্রার মান বিগত পঞ্চাশের দশকের পর সবচেয়ে বড়ো ধরনের বার্ষিক অবনতির মধ্যে নিপতিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধির কারনে এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি এই মর্মে সতর্কবানী উচ্চারন করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পাইকারী তেল ও গ্যাস মার্কেটে একটি স্থায়ী ধরনের মূল্যবৃদ্ধি পরিবারগুলোকে তাদের ক্রমবর্ধমান ইউটিলিটি বিলসমূহ আরেক দফা সংকুচিত করতে হতে পারে।
‘ব্যাংক অব আমেরিকা’র বিশ্লেষকরা বলেন যে, এ অবস্থায় গৃহস্থালীর প্রকৃত আয় ২০২২ সালে এর আগের বছরের তুলনায় ৩.১ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে, যা ১৯৫৬ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ বার্ষিক পতন। আরএসি বলেছে, চলতি সপ্তাহে চতুর্থবারের মতো রেকর্ড পরিমান মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে পেট্রোল ও ডিজেলের। পেট্রোল প্রতি লিটারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫০ পেন্স, আর ডিজেল ১৫৩ পেন্সেরও বেশী। দেখা যাচ্ছে, ১৯৯২ সালের পর মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। কভিড-১৯ এর কারনে বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়লে গত মাসে তা দাঁড়ায় ৫.৫ শতাংশ। এমনকি রাশিয়ার অভিযানের আগেও ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ড’ এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে পৌঁছার পূর্বাভাস প্রদান করে। তখন যুক্তরাজ্যের জ্বালানী রেগুলেটর অর্থ্যাৎ সরবরাহকারী অফজেম তাদের গৃহস্থালীর মূল্যসীমা ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি করে। এতে গ্যাসের মূল্যে শীতকালীন বৃদ্ধি প্রতিফলন হয়।
যা-ই হোক বিশ্লেষকরা এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ইউক্রেন সংঘাত মূল্যস্ফীতিকে আরেক দফা বাড়িয়ে দিতে পারে। সম্ভবত: চলতি বছরই তা ৮ শতাংশের বেশী বৃদ্ধি পেতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও তেলে দাম যে পর্যায়ে ছিলো তা অব্যাহত থাকলে মূল্যস্ফীতি ১.৯ শতাংশ বেশী হতে পারে, যা বছরের শেষে হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিলো এবং সেটা ৬ শতাংশের কাছাকাছি।
ইউএস ব্যাংক অনুসারে, চলতি বছর শ্রমিকদের মজুরী, বেনিফিট এবং আয়ের অন্যান্য উৎস হ্রাসের সাথে পাল্লা দিয়ে গৃহস্থালীর প্রকৃত আয় ৩.১ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। এটা ১৯৫৬ সালের পর বার্ষিক সর্বোচ্চ পতন বা হ্রাস।
অবশ্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ড- এর ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ রবার্ট উড বলেন, অনেক বায়বীয়তা লক্ষনীয়। আজ জ্বালানীর মূল্যের তীব্র পতন দেখা গেছে। তাই এটা প্রকৃত আয়ের জন্য নেতিবাচক হিসেবে দেখা না-ও হতে পারে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button