আমেরিকা ৪৩ শতাংশ বেশি তেল কিনছে রাশিয়া থেকে!
পেট্রল, ডিজেলের দাম বাড়তে বাড়তে আকাশছোঁয়া হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে কাঁচা তেলের দামে এই আগুন। রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ভাবে বয়কট করার ডাক দিয়েছে আমেরিকা। এই আমেরিকাই অন্য দেশগুলিকে রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কিনতে নিষেধ করে, কিন্তু নিজে মস্কো থেকে সস্তায় বিপুল তেল কিনছে! মস্কোর এমন দাবিতে বিশ্ব জুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেনের উপর বর্বরোচিত হামলার ‘অপরাধ’-এ রাশিয়াকে সামাজিক ভাবে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন আমেরিকার রাজনীতিবিদরা। সে দেশের বিভিন্ন সংস্থা রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। রাশিয়ার উপর একের পর এক কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রক্রিয়াও শেষ। গোটা বিশ্বের কাছে আমেরিকার আহ্বান, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করে পুতিনের দেশের উপর চাপ বাড়ানো ছাড়া আর উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া অপরিশোধিত তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছে। তবে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশ নয়, তার সুযোগ নিয়েছে আমেরিকা। বাইডেনের দেশ নিজে রুশ তেল কেনা এক দিনের জন্য বন্ধ তো করেইনি বরং সম্প্রতি তা লাফিয়ে বেড়ে গিয়েছে!
‘রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিল’-এর ডেপুটি সেক্রেটারি মিখাইল পাপোভ বলেন, ‘‘যে আমেরিকা গোটা বিশ্বকে রাশিয়াকে সব রকম ভাবে বয়কট করার ডাক দিচ্ছে, তাদের কারবারটা আমাকে বলতে দিন। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কিন্তু থামায়নি, উল্টে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এত দিন যতটা পরিমাণ তেল আমেরিকা কিনত, তার চেয়ে ৪৩ শতাংশ অতিরিক্ত কাঁচা তেল কিনছে। যা প্রায় এক লক্ষ ব্যারেল। শুধু তাই নয়, খনিজ সারকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তকমা দিয়ে আমদানি জারি রেখেছে।’’ রাশিয়ার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে আমেরিকা, এমন খবর মেলেনি। অর্থাৎ, গোটা বিশ্বকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে নিষেধ করেও নিজে রুশ তেল আমদানি বন্ধ করেনি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
যুদ্ধপরিস্থিতির জেরে গোটা বিশ্বেই তেলের দাম বাড়ছে। ভারতে পেট্রলের পর বিভিন্ন রাজ্যে ডিজেলও একশোর গণ্ডি পার করে ফেলেছে। কোথায় গিয়ে ঠেকে, অসহায় হয়ে তা-ই এখন দেখছে আম জনতা। এরই মধ্যে সস্তায় বাড়তি তেল কিনে আমেরিকার ভাঁড়ার ভরানোর খবর। সরকারি ভাবে ভারতের তরফে এর কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। কিন্তু আমেরিকার দ্বিচারিতার অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন স্তরে।