এখনো অনড় অবস্থানে হাসিনা-খালেদা : শঙ্কা ঘনীভূত, সমাধানের আহ্বান
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষায় বলেছেন, দেশে কেউ অনর্থক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে জনগণ তাকে প্রতিহত করবে। বুধবার পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে গণভবনে ঈদের শুভেচ্ছা শেষে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ২৫ অক্টোবরকে সামনে রেখে খামোখা উত্তেজনা ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আর দা, কুড়াল-ছুরি নিয়ে বের হওয়ার হুমকি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি বিরোধীদলকে উদ্দেশ করে বলেন, আলোচনার দরজা খোলা। বিএনপি সংসদে এসে মুলতবি প্রস্তাব দিতে পারে,আলোচনা হবে; আমার কোনো সমস্যা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, হেরে যাওয়ার ভয়ে বিরোধীদলের নেতা নির্বাচনে আসছেন না। প্রধানমন্ত্রী অশা করেন, গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা ও জনগণ তাদের ভোট দেবে -এমন বিশ্বাস থাকলে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনে আসবেন।
এদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ আবারো বলেছেন, একদলীয় সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। তিনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বৃধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বেগম জিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, ২৫ অক্টোবর বিরোধীদলের সমাবেশ করতে দিতে হবে; দেশ কারো একার নয়।
ওদিকে, মহাজোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, “জাতি আজ মহাশঙ্কিত। দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাবনা খুবই কম।”
বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার আজকের এসব বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী বলেন, শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া নতুন কিছুই বলেননি। সরকার ও বিরোধীদল তাদের আগের অবস্থানেই আছে। দু’পক্ষই শক্তি পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছে।
একই মনোভাব ব্যক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।
তিনি মনে করেন, ২৫ আক্টোবরকে ঘিরে জনমনে যে আতংক বিরাজ করছে তা আরো ভয়ানক রূপ নিতে পারে। আর দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে জনদুর্ভোগ বাড়বে এবং দেশের অর্থনৈকি অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে।
এরকম সংকটজনক অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য দেশের মানুষ এখনো রাজনীতিবিদদের শুভবুদ্ধির দিকে তাকিয়ে আছে।