শনিবার থেকে মক্কা ত্যাগ করা শুরু করবেন হাজিরা

Hajjচলতি মৌসুমের হজের মূল কার্যক্রম বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে। শুক্রবার বিদায় তাওয়াফ শেষ করে শনিবার থেকে মক্কা ত্যাগ করতে শুরু করবেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হজ করতে আসা প্রায় বিশ লক্ষাধিক হাজি। যারা হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে মদীনা জিয়ারত সম্পন্ন করেছেন তারা ফিরবেন নিজ নিজ দেশে। আর যে সব হাজিরা হজ শুরুর আগে মদীনা জিয়ারাত করতে পারেননি তারা আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই মদীনা জিয়ারতের উদ্দেশে রওনা হবেন। মদীনা জিয়ারত শেষে স্বস্ব দেশে পত্যাবর্তন করবেন হাজিরা। এর আগে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ৮ জিলহজ (১৩অক্টোবর) রোববার থেকে। ৮ জিলহজের আগে হাজিরা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। তারপর তাওয়াফে কুদুমের মাধ্যমে শুরু হয় হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা। ৮ জিলহজ তারিখে তওয়াফে কুদুম শেষ করার পর হাজিরা মিনায় অবস্থান করেন। মিনাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে পরের দিন অর্থাৎ ৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর আরাফাতের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা অবস্থায় একই আযানে যোহর এবং আসর নামাজ আদায় করেন তারা। এদিন দুপুরে হজের খুৎবা দেন সৌদি গ্রান্ড মুফতি আব্দুল আজিজ বিন আল শায়খ।
এখানে এসে হাজিরা আল্লাহর জিকির ও তসবিহ তাহলিল পড়া আর দুই হাত তুলে মহান আল্লাহর কাছে মনের আকুতি মিনতি জানান। সূর্যাস্তের পর হাজিরা মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রায় ২০ লাখ হাজি।  মুজদালিফায় এসে একই আযানে মাগরিব এবং ইশার নামাজ এক সঙ্গে আদায় করে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করে মুজাদালিফা থেকে জামরায় (শয়তান) নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ এবং আল্লাহর স্বান্নিধ্য পাওয়ার আশায় জিকর আসগর আর তাসবিহ তাহলিল করেন। মুজদালিফায় রাত্রি যাপনের পর ১০ জিলহজ্জ সকালে সূর্য উদয়ের পর জামারায় পাথর নিক্ষেপের জন্য রওয়ানা দেন হাজিরা। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাবার আগে (দুপুরের পুর্বেই) জামারাতুল আকাবায় ৭টি পাথর নিক্ষেপ করেন। জামরাতুল আকাবায় (বড় শয়তান) পাথর নিক্ষেপের পর আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় হাজিরা পশু কুরবানি করেন। এরপর হাজিরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম খুলে স্বাভাবিক কাপড় পরিধান করেন। একে তাহাল্লুলে আসগর বলা হয়।
তাহাল্লুলে আসগরের পর হাজিরা তাওয়াফে ইফাদা এবং সায়ী(সাফা-মারওয়ায় সাত চক্কর) শেষ করে পুনরায় মিনায় যান তারা। ১১ ও ১২ জিলহজ (বুধ এবং বৃহস্পতিবার) মিনায় অবস্থান করে মধ্যম ও ছোট জামরায় পাথর নিক্ষেপ করে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করেন হাজিরা। এরপর শুক্রবার মক্কায় অবস্থান করে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আর যারা মদীনা জিয়ারত করেন নি তারা মদীনার উদ্দেশে মক্কা ত্যাগ করবেন। মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশনের সূত্র মতে এ বছর ৮৭ হাজার ৮৫৪জন (গাইডসহ) বাংলাদেশি হজের উদ্দেশে সৌদি আরব আসেন। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৩৫জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। যার মধ্যে মক্কায় ২৩ জন, মদিনায় ৯ জন ও জেদ্দায় ৩জন (পুরুষ ৩১ জন, মহিলা ৪ জন)। শনিবার (১৯অক্টোবর) থেকে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয়ে চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button