সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়
পর্যটকদের পদচারণায় মুখর এখন সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো। বৃহস্পতিবার ঈদের দ্বিতীয় দিনে সিলেট নগরী ও নগরীর বাইরের পর্যটন স্পটে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
সিলেট শহর ও জেলার বাসিন্দা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় করেছে জাফলং ও মাধবকুন্ডসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে।
সিলেটে প্রায় অর্ধশতাধিক পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিবছর দেশ-বিদেশী পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। তবে ঈদের ছুটিতে স্বপরিবারে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে আসেন সিলেট ও সিলেটের বাইরের লোকজন। বিশেষ করে সরকারী ও বেসরকারী চাকুরীজীবিরা মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে কোলে বছরে অন্তত দু’একবার হারিয়ে যেতে চান। তাই ছুটে আসেন দেশের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মতই সিলেটের প্রাকৃতিক নৈসর্গে।
সিলেটে পাহাড়ঘেরা চা বাগান, প্রকৃতিকন্যা জাফলং, নীল স্বচ্ছ পানির লালাখাল, প্রকৃতির খেয়ালি রূপ লোভাছড়া, মাধবকুন্ড ও হামহামের অপরূপ ঝর্ণা, বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল, সবচেয়ে বড় হাওর টাঙ্গুয়া ও হাকালুকির বুকে গা ভাসিয়ে দিতে কার না ইচ্ছা করে। আর তাই ছুঁটে আসেন পর্যটকরা দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
সিলেট নগরীর ওসমানী শিশু উদ্যান, সুরমা তীর, পর্যটন মোটেল, টিলাগড় ইকোপার্ক, ন্যাচারাল পার্ক, বাইপাস, শাহজালাল (র.) মাজার এবং শহরের বাইরে জাকারিয়া সিটি, গোলাপগঞ্জের ড্রীমল্যান্ড পার্ক, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, শ্রীপুর বিনোদন কেন্দ্রসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বৃহস্পতিবার ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মত।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রোজার ঈদের দিনই ভিড় থাকে প্রচুর। কোরবানীর ঈদের কারণে প্রথমদিন তেমন ভিড় ছিলো না। দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই প্রচুর সংখ্যক লোক সমাগম ঘটতে থাকে। তা অব্যাহত থাকে এবং সমাগম বৃদ্ধি পেতে তাকে পরের ৩ থেকে ৪দিন পর্যন্ত।
তবে দীর্ঘদিন অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা বিশ্বের ১৮টি সোয়াম্প ফরেস্টের অন্যতম বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট ‘রাতারগুল’ এর প্রতি পর্যটকদের এখন আকর্ষণ অনেক বেশি। গত দু’বছর ধরে পরিচিতি লাভ করা এই পর্যটন কেন্দ্রে আজ প্রচুর সংখ্যক পর্যটক ভিড় জমান।
বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের সদস্য ডা. জাকারিয়া হোসেন জানান, প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক সিলেটের দর্শনীয় স্থানে ভিড় করেন। দিনদিন যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এবং প্রচার-প্রচারণা বাড়ার সুবাধে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটক আকর্ষণ বাড়ছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, সিলেটের পর্যটন শিল্পে ব্যাপক সম্ভাবনা বিরাজ করছে। কিছু কিছু দর্শনীয় জায়গা এখনো আড়ালে রয়েছে। বর্তমান সরকার পর্যটন খাতকে বিকশিত করার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে দিনদিন সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় বাড়ছে।