এনএইচএস’র রোগীরা প্রাইভেট চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন
এনএইচএস-এ দীর্ঘ সময় অপেক্ষমান রোগীরা বাধ্য হচ্ছেন প্রাইভেট চিকিৎসা গ্রহণে, যার ফলে হাজারো পাউন্ড পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। যুক্তরাজ্যে গত বছরের শেষ তিন মাসে ৬৯ হাজার রোগীর চিকিৎসা হয়েছে নিজস্ব অর্থে। মহামারীর আগের একই সময়ে তুলনায় এটা ৩৯ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, লোকজন কতটা মরিয়া হয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন এটা তার একটি আলামত। এজন্য লোকজন ঋণ করছেন এবং ক্রাউড ফান্ডিং এর মাধ্যমে সংগ্রহের আশ্রয় নিচ্ছেন।
প্রাইভেট হেলথ কেয়ার ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক এর পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছর ২ লাখ ৫০ হাজার লোক প্রাইভেট স্বাস্থ্য সেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করেন। এদের মধ্যে যাদের প্রাইভেট ইন্সুরেন্স রয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
নিতম্ব ও হাঁটু প্রতিস্থাপনের মত অপারেশনে তাদের পরিশোধ করতে হয়েছে ১৫০০০ পাউন্ড। এতে একটি দ্বিমুখী ব্যবস্থা গড়ে উঠার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। রোগীর একটি গ্রুপ এই চিকিৎসা নিতে সক্ষম হচ্ছে, আর দরিদ্র রোগীরা তা গ্রহণে সক্ষম হচ্ছে না।
১৯ বছর বয়সী ক্যাটিং হুপার হাঁটুর সমস্যায় ভুগছিলেন। একসময় তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। এনএইচএস-এ চিকিৎসা পেতে তাকে দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।
ক্যাটি বলেন, আমি এত অপেক্ষা করতে পারিনি, এতে আমার চাকুরী চলে যাবে। এটা একটি একটিভ জব এবং আমি তা মেনে নিতে পারি না। শেষ পর্যন্ত তিনি এপ্রিলে চিকিৎসার জন্য ঋণ নেন স্পায়ার সাউথাম্পটন হসপিটালে প্রাইভেট চিকিৎসার জন্য। এতে তার ব্যয় হয় ফলো-আপ ফিজিওথেরাপি সহ সাত হাজার পাউন্ডেরও বেশি।
কিন্তু তিনি দুই সপ্তাহের মধ্যে অপারেশন করাতে সক্ষম হন। এখন তিনি কাজে ফিরে গেছেন। এমনকি বাস্কেটবল পর্যন্ত খেলতে পারছেন।
তিনি বলেন, এটা করতে গিয়ে আমাকে আর্থিক চাপে পড়তে হয়েছে। তবুও অর্থ শতভাগ কাজে লেগেছে। আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন কিন্তু সময় পুনরায় কিনতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, ইংল্যান্ডে বর্তমানে ৬৬ লাখেরও বেশি লোক হাসপাতালে চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন। এটা মোট জনসংখ্যার প্রতি ১০ জনে একজন।
মন্ত্রীরা এই বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন যে, ২০২৪ সালের আগে এই সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। অপেক্ষমাণদের এক-তৃতীয়াংশ ১৮ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছেন। যুক্তরাজ্যের অন্যান্য স্থানেও একই সমস্যা বিদ্যমান।