পুঁজিবাজারে চালু হচ্ছে আইপিও ইনডেক্স
পুঁজিবাজারে আসা নতুন কোম্পানিগুলোর গতিবিধি বোঝার লক্ষ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ইনডেক্স চালু হতে যাচ্ছে। বিনিয়োগের সুবিধার্থে কোম্পানিগুলোর কর্মক্ষমতা, শেয়ার দর ওঠানামাসহ সার্বিক বিষয় জানার জন্য আইপিও ইনডেক্স চালু করা হবে। এ ইনডেক্স দেখে তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিগুলোর পারফরমেন্স, শেয়ার দরের গতিবিধি, মার্কেট গতিবিধিসহ ইত্যাদি বিষয়ে জানতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা থাকলেও ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য এদিকে হস্তক্ষেপ করছে না বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আইপিও ইনডেক্স চালু করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, সাধারণত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কোনো কোম্পানির শেয়ারগুলো আলাদাভাবে নিয়ে যে ইনডেক্স তৈরি করা হবে তাকে আইপিও ইনডেক্স বলে। এ ইনডেক্সে কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম দুই বছর তাদের পারফরমেন্স কেমন, প্রাইস ওঠানামা কেমন, মার্কেট গতিবিধি কেমন তা পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
প্রসঙ্গত: বিশ্বের অধিকাংশ দেশে আইপিও ইনডেক্স চালু রয়েছে। বিশেষ করে ভারত ও মালয়েশিয়ায় রয়েছে এ ধরনের ইনডেক্স। সব দেশের কথা মাথায় রেখে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো একটু আলাদাভাবে দেখতে পারার লক্ষ্যেই আইপিও ইনডেক্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বিনিয়োগের সুবিধার্থে কোম্পানিগুলোর কর্মক্ষমতা, মূল্য ওঠানামাসহ সার্বিক বিষয় জানার জন্য আইপিও ইনডেক্স গঠনের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে এ ইনডেক্সের গুরুত্ব, বাস্তবমুখিতার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে গত ২ এপ্রিল সিএসইকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেয় বিএসইসি।
বিএসইসির পরিচালক মো. মনসুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আইপিও ইনডেক্সের গুরুত্ব, বাস্তবমুখিতা, বাস্তব উদাহরণ এবং ইনডেক্স কনস্ট্রাকশন প্রসেস সম্পর্কে বিস্তারিত কাগজপত্র ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হলো। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল সিএসই বিএসইসি’র চাহিদা মাফিক প্রস্তাবনার সকল কাগজপত্র কমিশনে দাখিল করেছে।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আইপিও ইনডেক্স গঠনের লক্ষ্যে সিএসই একটি প্রস্তাব জানায় বিএসইসির কাছে। ওই প্রস্তাবের আলোকে গত ১২ মার্চ বিএসইসির ৪৭২তম কমিশন সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, সিএসইর আইপিও ইনডেক্সের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এর গুরুত্ব, বাস্তবমুখিতা, বাস্তব উদাহরণ এবং ইনডেক্স কনস্ট্রাকশন প্রসেস সম্পর্কে বিস্তারিত কাগজপত্র দাখিলের পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজিদ হোসেন জানান, যাবতীয় প্রস্তাব দেয়ার পর বিএসইসির পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চেয়ে বিএসইসি চিঠি পাঠায়। ইতিমধ্যে সিএসইর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর নির্ভর করছে কবে নাগাদ আইপিও ইনডেক্স চালু করা হবে। তিনি বলেন, যেসব কোম্পানি বাজারে আসছে তাদের আলাদাভাবে দেখতে পারলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া কোম্পানিগুলোর পারফরমেন্স, প্রাইস ওঠানামা, মার্কেট গতিবিধি ইত্যাদি দেখে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।