ইউক্রেইন আগ্রাসন কাগুজে বাঘে পরিনত করেছে পুতিনকে
সম্প্রতি উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনের বৈঠক। ২০০১ সালে চীন, রাশিয়া, কাজাখাস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের উদ্যোগে গড়ে ওঠে এসসিও (সামরিক জোট)। ইউরেশিয়াভুক্ত দেশগুলোর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক জোট এসসিও। কিন্তু এবার উজবেকিস্তানে যথাযথ সমাদার পাননি রুশ প্রেসিডেন্ট। সেদেশে উজবেক প্রেসিডেন্ট শওকত মিওজিওয়েভ চীনা প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানালেও পুতিনকে স্বাগত জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ অরিপভ।
এ প্রসঙ্গে লন্ডনে বসবাসরত উজবেক বংশোদ্ভূত থিংক ট্যাক সেন্ট্রাল এশিয়া ডিউ ডিলিজেন্স-এর ডিরেক্টর আলিশার ইলখামোভ বলেন, পুতিন সেখানে আচরিত হন বারডেন বা দায় হিসেবে, সম্পদ হিসেবে নন। এজন্য বিশেষভাবে দায়ী ইউক্রেইনে রাশিয়ার ভূমিকা। উজবেক প্রেসিডেন্টের এই কূটনৈতিক নিয়ম ভঙ্গ এই সংকেত দেয় যে, রাশিয়ার এই সাবেক পেছনের আঙ্গিনার রুশ বিষয়ক অবস্থানে বড়ো ধরনের পরিবর্তন হয়েছে।
ইউক্রেইন যুদ্ধকে ২০০ দিনেরও বেশী প্রলম্বিতকরণ এবং রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে সেখানে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগ ও সামরিক বিপর্যয় রাশিয়ার ব্যাপারে উজবেকিস্তানের এমন অবস্থান পরিবর্তনের কারন, এমন ধারনা পর্যবেক্ষক মহলের। ধারনা করা হয়, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মধ্য এশিয়ার দেশসমূহের ওপর পুতিনের প্রভাব তুঙ্গে ছিলো গত ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে, ঠিক ইউক্রেইন আক্রমনের প্রাক্কালে। জানুয়ারীতে এক জনপ্রিয় গনঅভ্যত্থানে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমারত তোকায়েভ বাধ্য হন শত রুশ সার্ভিসম্যানকে সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবেলার জন্য সেদেশে আমন্ত্রন জানাতে। যৌথ নিরাপত্তা চুক্তির আওতায় এমন আমন্ত্রন জানানো হয়। ২০২১ সালের আগষ্টে আফগানিস্তানের তালেবানের নিয়ন্ত্রন গ্রহন মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার অবস্থানকে জোরালো করে। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার বিপর্যয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন অবস্থা এবং পঙ্গু করার মতো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে এক ধরনের কাগুজে বাঘে পরিনত করেছে। সম্প্রতি নগরনো কারাবাখে আর্মেনিয়ার পক্ষে রুশ হস্তক্ষেপকেও ভালো চোখে দেখেনি উজবেকিস্তান।