হাজার হাজার আফগান শরনার্থী এখনো ব্রিটেনের হোটেলে থাকছেন
আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা গ্রহনের পর সরাসরি আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা আফগান শরনার্থীসহ ৯ হাজারেরও বেশী আফগান শরনার্থী পরিবারের সদস্যদের জন্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ আজো আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি। আফগানিস্তান থেকে নিয়ে আসা শরনার্থীদের অনেকে ইতোমধ্যে ১৮ মাস অপেক্ষা করেও আবাসন সুবিধা না পেয়ে বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন। যদিও ২১ হাজার শরনার্থীর বেশীর ভাগই বাসস্থান পেয়েছেন, কিন্তু এদের অর্ধেককে এখনো থাকতে হচ্ছে হোটেলে।
হোম অফিসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৯ হাজার ২৪২ জন শরনার্থীকে রাখা হয়েছে যুক্তরাজ্যের ৬৩ টি হোটেলে। এদের অর্ধেকই শিশু। যুক্তরাজ্য প্রায় ১৮ হাজার লোককে নিয়ে এসেছিলো, যার মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশী ব্রিটিশ নাগরিক। বাকীরা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন সৈনিক হিসেবে বা অন্যান্য ব্রিটিশ সংস্থায়। ২০২১ সালের মধ্য আগষ্টে তালেবানদের ক্ষমতা গ্রহনের পর ২ সপ্তাহের মধ্যে এই উদ্ধার কাজ করা হয়েছিলো। কিন্তু লোকজনকে সরিয়ে আনার কাজ শেষ হওয়ার পরেও হাজার হাজার লোকের দেশত্যাগ অব্যাহত থাকে। তারা ‘আফগান সিটিজেনস্ রিসেটেলমেন্ট স্কীম’ (এসিআরএস) কিংবা ‘আফগান রিলোকেশনস্ এন্ড অ্যাসিস্ট্যান্স পলিসি’র (এআরএপি) জন্য আবেদন করেন।
অনেকে নিজেই এটা করেন যুক্তরাজ্যে এগুলোর যে কোন একটিতে। অন্যান্যরা তাদের আবেদন প্রতিবেশী দেশগুলোতে ব্রিটিশ কূটনৈতিক মিশনগুলোর মাধ্যমে এই আবেদন করেন। ওয়ালসলের ‘আফগান কমিউনিটি এন্ড ওয়েলকেয়ার সেন্টার’- এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম জাজাঈ বলেন, যারা হোটেলে অবস্থান করছে, তাদের সবাইকে সরিয়ে আনা হয়নি। এদের অনেকেই পরবর্তী মাসসমূহে এখানে এসেছেন। শরনার্থীদের পুনর্বাসনের নেতিবাচক দিক প্রসঙ্গে জাজাঈ বলেন, এদেশ পুনর্বাসিত হওয়ার কাজটি সহজ নয়। যাদেরকে হোটেলে রাখা হয়েছে, তাদেরকে দেশের কোথাও না কোথাও আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে, যেখানে পরিবার কিংবা বন্ধুহীন অবস্থায় তাদের থাকতে হবে। এতে ভাষাগত ও সামাজিক পরিবেশগত সমস্যা হবে। এবারে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। ব্রিটিশ মিডিয়া সূত্রে প্রকাশ, হোটেলে রাখা শরনার্থীদের জন্য দৈনিক ব্যয় ১০ লাখ পাউন্ড। বর্তমান আর্থিক সংকটের সময় এতো অর্থ ব্যয় করে তাদের হোটেলে না রেখে অন্যত্র আবাসনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।