যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি কমছে, কিন্ত খাদ্য পণ্যের দাম চড়া
যুক্তরাজ্যের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি পর পর দুই মাসের মতো হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু গত ৪০ বছরের মধ্যে অন্যতম উচ্চ পর্যায়ে থেকে গেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মধ্যে খাদ্যসামগ্রীর প্রায় ১৭ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি গৃহস্থালীগুলোকে চাপের মধ্যে রেখেছে। সংস্থাটির মতে, ভোক্তা মূল্যসূচকের দ্বারা পরিমাপ অনুযায়ী গত মাসে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার আবারো হ্রাস পায়, নেমে যায় ১০.৫ শতাংশে। নভেম্বর থেকে অব্যাহতভাবে নামে ১০.৭ শতাংশে এবং অক্টোবরে এটা ছিলো ১১.১ শতাংশ। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত বছর জুড়ে খাদ্য ও মদ্য নয় এমন পানীয়র দাম সামগ্রিক হারের চেয়ে অনেক বেশী বৃদ্ধি পায়, যা ছিলো ১৮.৮ শতাংশ। এটা ১৯৭৭ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ বার্ষিক বৃদ্ধি।
ব্রেড, দুধ ও পনিরের মতো মৌলিক নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধি পায়। এটা স্বল্প আয়ের গৃহস্থালীগুলোর ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করে, যারা তাদের আয়ের একটি বৃহত্তম অংশ ব্যয় করে খাদ্য ও জ্বালানীর জন্য। এক্ষেত্রে তাদের ব্যয় বিত্তশালীদের চেয়ে বেশী। গত বছরে একটি সাপ্তাহিক শপের ব্যয় বৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করলে দেখা যায়, দুধের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ব্রেডের দাম বাড়ে প্রায় এক পঞ্চমাংশ এবং চিনি ও পেস্তার মতো প্রধান নিত্যপন্যের মূল্য বাড়ে এক চতুর্থাংশ।
ঋষি সুনাকের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অন্যতম হিসেবে এবছর মূল্যস্ফীতির হার অর্ধেক হ্রাস করার প্রতিশ্রুতির পর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যা-ই হোক, বিশেষজ্ঞদের মতে, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হ্রাস সত্বেও ব্রিটেনের জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট শেষ হওয়ার যে আলামত নেই, তা পরিলক্ষিত হয় খাদ্যপন্যের মূল্যস্ফীতিতে।
রেজোলিউশন ফাউন্ডেশন- এর জনৈক সিনিয়র অর্থনীতিবিদ জ্যাক লেসলি বলেন, বিশেষভাবে স্বল্প আয়ের পরিবারসমূহের জন্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ, যারা উচ্চ জ্বালানী ব্যয়ও খাদ্যমূল্যের কারণে একটি বিশাল জীবনযাত্রার ব্যয় তারতম্যের খারাপ অংশে পড়ে আছে। অর্থনীতিবিদরা চলতি বছর মূল্যস্ফীতির একটি বড়ো হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছেন। অর্থনীতি ক্রমশ: কভিড মহামারি এবং রুশ-ইউক্রেইন যুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে নিজস্ব পথ করে নিতে সক্ষম হচ্ছে।