যুক্তরাজ্যে ১০ লাখেরও বেশী শিশু অসহায়
গত বছর যুক্তরাজ্যে ১০ লাখেরও বেশী শিশু অসহায় হয়েছে। এর মানে তাদের পরিবার এসব শিশুকে পর্যাপ্ত খাবার, পোশাক কিংবা পরিচ্ছন্নতা প্রদান করতে পারেনি অথবা তাদেরকে উষ্ণ রাখতে পারেনি। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। সমীক্ষাটিতে যুক্তরাজ্যের চরম দারিদ্রের এক অবিশ্বাস্য রূপ ফুটে ওঠেছে বলে অনেকের অভিমত। এতে দেখা গেছে, চরম ও বাস্তব দুঃখ দুর্দশা এখন আর কোন বিরল বিষয় নয়। বেনিফিট কর্তন ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপের ফলে গত ৫ বছরে এসব অসহায় মানুষের সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে এবং হিমশিম খাওয়া গৃহস্থালীগুলোকে ক্রমবর্ধমান হারে দাতব্য সাহায্যের ওপর নিয়মিত নির্ভরশীল করে তুলেছে।
দারিদ্র্য বিষয়ক প্রবক্তা, শিক্ষক ও সম্মুখসারির সমাজকর্মীরা অসহায়ত্ব অর্থ্যাৎ দুর্দশার শিকার মানুষের ওপর বিশেষভাবে শিশুদের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান হারে সতর্কবানী উচ্চারন করছেন। তারা অসহায় হয়ে পড়া শিশু ও অন্যান্যদের দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টিহীনতা, মানসিক অসুস্থতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, স্কুলে অনুপস্থিতি ও শ্রেণীকক্ষে নিম্নমানের আচরনের বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন।
এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে প্রায় ১৮ লাখ গৃহস্থালীতে ১৩ লাখ শিশুসহ ৩৮ লাখ অসহায় বা দুর্দমাগ্রস্ত লোক রয়েছেন। ২০২২ সালের এক সমীক্ষায় এটা পরিলক্ষিত হয়েছে। জোসেফ রাউন্ট্রি ফাউন্ডেশন (জেআরএফ) এই সমীক্ষা পরিচালনা করে। অসহায় গৃহস্থালীর অর্ধেকের হাউজিং ব্যয় বাদে সপ্তাহে ৮৫ পাউন্ডেরও কম অর্থ হাতে থাকে। আর এক চতুর্থাংশের কোন আয় নেই। জেআরএফ’র প্রধান নির্বাহী পল কিসসাক অসহায়ত্ব বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করায় সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, সরকার কাজ করতে অসহায় নয়। তারা এটা করাকেই বেছে নিচ্ছে। অসহায়ত্বের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তা প্রতিরোধ করা একটি জরুরী নৈতিক দায়িত্ব, যা একটি দেশ হিসেবে আমাদের মৌলিক মানবতার কথা বলে। এধরনের মিশন বা দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। সমীক্ষার সহ-পরিচালক অধ্যাপক সুজানে ফিটজপ্যাট্রিক ক্রমবর্ধমান দুর্দশা অসহায়ত্বকে একটি ‘নৈতিক ক্ষোভ’ বলে আখ্যায়িত করেন।