যুক্তরাজ্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে উগ্র ডানপন্থীদের সহিংসতা
সম্প্রতি উগ্র ডানপন্থীদের মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে। গত বুধবার দেশব্যাপী এই পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গত সপ্তাহের প্রথম দিকে দক্ষিন-পশ্চিম ইংল্যান্ডে ছুরিকাঘাতে তিন বছরের একটি শিশু নিহত হয়। এ নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হয় যে, একজন মুসলিম অভিবাসী শিশুটির হত্যাকারী। অনলাইনে ছড়ানো এই গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
ঐদিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিশেষজ্ঞ ইমিগ্রেশন ল’ ফার্মগুলো এবং কিছু ফ্যামিলি চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা এগুলোতে হামলা চালায়। লিভারপুল এলাকায় আশ্রয়প্রার্থীদের সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘এসাইলাম লিংক মার্সিসাইড’ তাদের ভবন বন্ধ করে দেয়। তারা জানায়, তাদের স্টাফরা এখন ভবনের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টার্মার, যিনি একজন সাবেক চীফ প্রকিকিউটার, বলেন, আমাদের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের কমিউনিটির নিরাপত্তার বিধান করা। তাদের নিরাপত্তা বিধান করা হবে। এটা নিশ্চিত করতে আমরা সবকিছু করবো যে, প্রয়োজনীয় সকল স্থানে পুলিশ থাকবে।
শঘহর ও নগরগুলোতে কয়েকশ’ দাঙ্গাকারীর ক্ষুদ্র গ্রুপগুলো পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের বসবাসের হোটেলসমূহের জানালা ভাংচুর করে। তারা এই বলে শ্লোগান দেয়: ‘এখান থেকে চলে যাও’ ও ‘নৌকা বন্ধ করো’। অভিবাসীরা ছোট্ট ডিঙি নৌকায় অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে এসে আশ্রয় প্রার্থনা করে থাকে।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেন, আমি জানি এসব ঘটনা অনেক মুসলিম ও সংখ্যালঘু নৃ-গোষ্ঠীর সম্প্রদায়কে ভীত-সন্ত্রস্ত করেছে। তাই আমি সঙ্গীয় লন্ডনবাসীদের তাদের বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের নিবৃত্ত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি এবং যত্ন ও সহানুভূতি দেখানোর জন্য বলছি, যা লন্ডনবাসীদের ঐতিহ্য।
পোস্টস অনলাইন বলেছে, বুধবারের ঘটনায় অভিবাসীদের সহায়তাদানকারী ইমিগ্রেশন সেন্টার ও ল’ ফার্মগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত করা হয়ে থাকতে পারে। ‘পাবলিক প্রসিকিউশনে’র পরিচালক স্টিফেন পার্কিনসন বলেন, ১১ বছর বয়সী শিশুরাও সহিংসতায় জড়িত হয়ে পড়তে দেখা গেছে।
তিনি বলেন, তারা তাদের কর্মের জন্য যাবজ্জীবন পরিনতি ভোগ করতে হতে পারে।