মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরু

লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরাইলের পেজার ও ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণের মত সাইবার যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তা না থামালে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না, এমন অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তাদের বক্তব্য, অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোতে যুদ্ধ আরও ছড়িয়ে পড়বে।
ইতিমধ্যে লেবাননে আরো কয়েকশো লোক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। বহু লোক বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মনে হচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত লেবাননের সীমান্ত ছাড়িয়ে যুদ্ধ অধিকতর বিস্তৃত হবে। ইসরাইল অঞ্চলটিকে একটি সম্প্রসারিত আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে ধাবিত করেছে। অন্তত এ মুহূর্তে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইসরাইলের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো থেকে সহায়তা লাভের জন্য যুদ্ধের বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন, ইতোমধ্যে যিনি খোদ ইসরাইলের জনগণ ও অন্যান্য দেশের তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন।
তিনি লেবাননকে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। ইসরাইল শুধু যে লেবাননের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু সমূহে আঘাত হানছে এমন নয় তারা সিরিয়া ও ইরাকের এসব স্থানগুলোতেও আঘাত করছে। গত এক দশক যাবৎ দেশ দুটি ইরানের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।
বর্তমানে পরিস্থিতি অধিকতর খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের উগ্র ডানপন্থী সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিচ্ছে যদিও পশ্চিমা দেশসমূহ ইসরাইলি অপরাধগুলোর সাথে জড়িত হতে চায় না তবুও তারা ইসরাইলকে অস্ত্রও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। অন্য কথায় বলতে গেলে, পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের অপরাধগুলোতে সহায়তা করতে দ্বিধান্বিত নয়। উপর্যুপরি এই ঘোষণা প্রদানের মাধ্যমে তারা ইসরাইলকে ওপেন চেক বা দায়হীনতা প্রদান করছে যে, তারা সর্বদা ইসরাইলের পাশে থাকবে এবং এ অঞ্চলের যে কোন শক্তির হাত থেকে তাকে রক্ষা করবে। আঞ্চলিক আরব দেশগুলো যুদ্ধের গতিবিধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। মিশর যুদ্ধের বিস্তৃতির বিরুদ্ধে তার স্বর উঁচু করতে শুরু করেছে।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর পাল্টাপাল্টি হামলার জের ধরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের এই অপরাধের জবাবে ইরান নিশ্চুপ থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচাই।
রাশিয়া সতর্ক করে বলেছে, লেবাননে ইসরায়েলের হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে পুরোপুরি অস্থিতিশীল করার এবং এ সংঘাতকে বিস্তৃত করার আশঙ্কা তৈরি করেছে। এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন।
লেবাননে হামলার নিন্দা জানিয়ে তুরস্ক বলেছে, গোটা মধ্যপ্রাচ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াসে লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাদের সমর্থন দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে আঙ্কারা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button