গাজায় সোয়া ৪ লাখ বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছে স্কুলের আশ্রয় কেন্দ্রে
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনী শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, গাজার ৪ লাখ ১৫ হাজারেরও বেশি বাস্তচ্যুত লোক জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এসব স্কুলকে আশ্রয় কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এ ধরনের আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া গাজার জনৈক নারী আয়েশা বলেন, এই স্থান তো পড়াশোনার জন্য, বসবাসের জন্য নয়। তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য পরিস্থিতির প্রচন্ড দুর্ভোগ ও আর্থিক সংকটের মধ্যে আছি। খাদ্য ও পানীয় জোগাড় করতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এখানে কোন সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছি না আমরা।
জাতিসংঘ সংস্থা জানায়, আরো লক্ষ লক্ষ লোক এর চেয়েও খারাপ অবস্থায় অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে টিকে থাকার সংগ্রাম করছে। ইউনিসেফ অনুসারে, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে স্কুল শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ইসরাইলের গণহত্যা ও বাস্তুচ্যুতকরণ অব্যাহত এবং আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত স্কুলগুলোতে ৬৪ টি হামলা চালানো হয় শুধু অক্টোবর মাসে। ফলে স্কুল খোলা সম্ভব হয়নি। ৬ লাখ ৫৮ হাজার শিশুর মধ্যে ৫৭ হাজারেরও বেশি ছিল প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী, যাদের পুরো বছরই বরবাদ গেছে পড়াশোনার ক্ষেত্রে। কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম একটি গ্রাজুয়েটিং ক্লাস গ্রাজুয়েটের জন্য আবশ্যকীয়তা পূরণে সক্ষম হয়নি। অক্টোবরে স্কুলগুলোতে ৬৪ টি হামলা হয়। এতে প্রাণ হারায় ১২৮ জন, যাদের অধিকাংশই শিশু। দিনে দুইটি করে ইসরাইলি হামলা হয় ওই মাসে।
গতবছর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ ধরনের ২২৬ টি হামলার ঘটনা ঘটে। মোট ১০ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয় গত ১৪ মাসে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেন, স্কুল কখনো যুদ্ধের সম্মুখ সারিতে থাকা উচিত নয় এবং যখন আশ্রয় খুঁজছে তখন শিশুদের উপর নির্বিচারে হামলা চালানো কখনো উচিত নয়। তিনি বলেন, গাজায় আমরা যে ভয়াবহতা দেখেছি তা মানবতার ইতিহাসে এক অন্ধকার নজির স্থাপন করেছে।
লক্ষণীয় যে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে স্কুলগুলো সুরক্ষিত স্থান। কিন্তু গত ১৪ মাসে গাজার ৯৫ শতাংশেরও বেশি স্কুল সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে।