ইসরাইল গাজার শিক্ষাকে তছনছ করে দিয়েছে
গাজার শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রনালয় জানিয়েছে যে, ইসরাইলের ১৫ মাসব্যাপী চলমান যুদ্ধ গাজার ৮৫ শতাংশ স্কুলকে অপরিচালনাযোগ্য বা অব্যবহারযোগ্য করে ফেলেছে, যা শিক্ষাক্ষেত্রে দুই বছর নষ্ট করে দিয়েছে। মন্ত্রনালয়ের পাবলিক রিলেশান্স ইউনিট- এর মহাপরিচালক আহমদ আল নাজ্জার এক বিবৃতিতে সংঘাতকে গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন শিক্ষা সংক্রান্ত বিপর্যয় হিসেবে বর্ননা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ইসরাইলী সৈন্যরা প্রায় ১২শ’ শিক্ষার্থী ও দেড়শ’ শিক্ষাবিদকে হত্যা করেছে এবং ১৪০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। নাজ্জার এই মর্মে জোর দেন যে, গাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিকল্পিত ধ্বংসলীলা শিক্ষা ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারকে বড়ো ধরনের চ্যালেঞ্জে পরিনত করেছে। সরকারী মিডিয়া অফিসের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরাইল ১৫ মাস ধরে ১ হাজার ১৬৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর বোমা বর্ষন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ৯২৭ টি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্ডাগার্টেন এবং শিক্ষাকেন্দ্র। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং হামলায় ১২ হাজার ৮শ’ শিক্ষার্থী, ৮শ’ শিক্ষক ও প্রশাসনিক স্টাফ নিহত হয়েছেন। আহমদ নাজ্জার আরো বলেন, মন্ত্রনালয় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সহায়তায় একটি জরুরী মোকাবেলা পরিকল্পনার কথা ভাবছে এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য।
পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ২০২৩-২৪ বর্ষ চালু করা। এর মধ্যে হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ শিক্ষা সেশনও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এতে রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলসমূহের পুনর্বাসন, অস্থায়ী স্কুল ও শিক্ষা সংক্রান্ত তাবু স্থাপন, ই-লার্নিং জোরদারকরণ এবং নষ্ট হওয়া শিক্ষার সময় পোষানোর জন্য হোমস্কুলিং এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের জন্য নিবিড় মনোবৈজ্ঞানিক সহায়তা কর্মসূচী গ্রহন।
নাজ্জার গাজার শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে ইসরাইলী অপরাধ তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান। তিনি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব যাতে শিক্ষা পুনরায় চালু করা যায় সেটা নিশ্চিত করতে স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুননির্মানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
গাজা গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ইসরাইলী হামলার ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে লোকসানের পরিমান ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী।