বাগেরহাট-২ আসনে ১৮ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মনির
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বাগেরহাটে বর্তমান ক্ষমতাসীন মহাজোটের থেকে বিরোধী দলের গ্রহনযোগ্যতা সাধারণ ভোটারদের কাছে বেশি। এলাকার মানুষ মনে করেন- ১/১১ প্রেক্ষাপটে বিএনপি-জামায়াত চরম বিপর্যস্ত হওয়ায় ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অতি সহজেই বাগেরহাটের ৪টি নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। প্রধান বিরোধীদল বিএনপি বাগেরহাটের রাজনীতিতে তেমন কোন ভূমিকা নিতে না পারলেও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যর্থতাই বিএনপির এখন মূল হাতিয়ার।
বাগেরহাট- ২ (জেলা সদর ও কচুয়া উপজেলা)
বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলা মিলে বাগেরহাট-২ আসন বাগেরহাটের ৪ আসনের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আসন এটি। স্বাধীনতার পর থেকে প্রত্যেক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখা গেছে খানজাহান আলী (রঃ) এর পূর্ণভূমি বাগেরহাট-২ আসনে যে দল জয়ী হয়, সে দল সরকার গঠন করে।
অন্যান্য আসনের থেকে বাগেরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের মধ্যে দলীয় কোন্দল প্রবল। পাশাপাশি বিএনপির বিদ্রোহী গ্র“প (মনি-আলাপ) এ আসনে সবচেয়ে বেশী সক্রিয় কারণ মনি ও আলাপ এ আসনের স্থানীয়।
সদ্য সমাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের খুলনার সমাবেশেও এই বিদ্রোহী গ্র“পটি আলাদাভাবে তাদের শত শত কর্মী-সমর্থক নিয়ে বাস-মাইক্রোবাস ও হুন্ডা নিয়ে যোগ দিয়েছিল। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও এই কোন্দলের সুরাহা আজও করতে পারেনি।
বিগত নির্বাচন গুলোতে দেখা গেছে, ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা ছিলেন।
অপরদিকে রাজনীতিতে নবাগত বিএনপি-জামায়াত জোট প্রার্থী বর্তমান জেলা বিএনপি সভাপতি এম. এ সালাম, ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি সিলভার সেলিম বলে খ্যাত এম এ এইচ সেলিম (বাগেরহাট ১ আসনের বর্তমান এমপি শেখ হেলাল উদ্দিন) ও ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মীর সাখাওয়াত আলী দারু নির্বাচিত হন (প্রতিদ্বন্দী ছিলেন বিএনপি দলীয় তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান)।
১৮ দলীয় জোট মনোনয়ন প্রত্যাশী মনির
বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এ আসনে এম এ সালাম এবারও নির্বাচন করতে চান। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। কোনো কারণে প্রার্থী না হলে তার বড় ভাই সাবেক এমপি শিল্পপতি এম এ এইচ সেলিম এই আসনে প্রার্থী হবেন বলে প্রচার হচ্ছে।
সালাম-সেলিম ছাড়াও নতুন মুখ হিসেবে জেলা বিএনপির যুগ্ন-সম্পাদক ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এ পি এস মনিরুল ইসলাম খান। বাগেরহাটের বিএনপির বিদ্রোহী গ্র“পের নেতৃত্ব দিয়ে তার নাম ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। এলাকায় উন্নয়ন, সামাজিক কর্মকাণ্ডে ও বহু কর্মসংস্থান করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। জেলা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা তার পক্ষে সুদৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। ১/১১র অসাংবিধানিক সরকারের নির্যাতন উপেক্ষা করার কারণে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলার আসামী হওয়ায় এলাকাবাসী মনে করে দলের পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে এই আসনে মনিরুল ইসলাম খানের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ইতিমধ্যেই তিনি এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন।
১০ম সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম খান জানান, বাগেরহাটে আমার নির্বাচনী এলাকায় বিগত সাড়ে চার বছরে হাট, ঘাট, বালুমহাল, নিয়োগ-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি এবং সন্ত্রাসের কারণে জনগণ অতিষ্ঠ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নিয়োগ-বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ইত্যাদি কারণে ভোটাররা ক্ষমতাসীন জোটের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। এসব কারণে আগামী নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির জয় সুনিশ্চিত বলে মনে করেন তিনি।