ইসরাইল ফিলিস্তিনীদের ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করেছে
সম্প্রতি জনৈক ইসরাইলী সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন যে, তাদের সেনাবাহিনী প্রতিদিন অন্তত: ৬ বার গাজায় ফিলিস্তিনীদের ‘হিউম্যান শিল্ড’ অর্থ্যাৎ মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতো, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ইসরাইলী কর্মকর্তা ইসরাইলী মিলিটারী পুলিশের সমালোচনা করে বলেন, এধরনের আচরনের ব্যাপারে তারা মাত্র ৬ বার তদন্ত করেছিলো।
উক্ত কর্মকর্তা বলেন, ফিলিস্তিনীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে ইসরাইলী পুলিশ মাত্র ৬ টি তদন্ত পরিচালনা করেছে জানতে পেরে আমি প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। গাজায় এটা ঘটেছে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ বার। যদি কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিতো, তবে তাদের অন্তত: ২ হাজার ১৯০ টি তদন্ত পরিচালনা করার প্রয়োজন হতো।
তিনি এই বলে যুক্তি দেখান যে, তদন্তের ঘোষনা একটি উচ্চমানের প্রচেষ্টা যার দ্বারা আমরা নিজেদেরকে এবং বিশ্বকে বলতে পারতাম যে, আমরা নিজেরা তদন্ত করছি। উক্ত কর্মকর্তা গাজায় ৯ মাস দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ‘মস্কুইটো প্রসিডিওর’ নামে আরেকটি পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনীদের বাড়িঘরে ঢুকতে বাধ্য করা হতো- অস্ত্রধারী কিংবা বিস্ফোরক আছে কি-না, তা পরীক্ষা করার জন্য। তিনি বলেন, আমি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রথম এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করি দুই মাসের স্থল হামলার সময়। কিন্তু আমি জানতাম না, এধরনের কাজ কতোটা স্বাভাবিক ছিলো ইসরাইলী সামরিক বাহিনীর কাছে।
ইসরাইলী সৈন্যরা মস্কুইটো প্রসিডিওরে ব্যবহৃত ফিলিস্তিনীদের নাম দিয়েছিলো ‘শাওয়িশ’। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি প্লাটুনে একজন ‘শাওয়িশ’ রয়েছে। একজন ‘শাওয়িশ’ বাড়ি পরিষ্কার করার আগে কোন পদাতিক সৈন্য সেই ঘরে ঢুকতো না। তার দাবি, ইসরাইলী সিনিয়র কমান্ড বিষয়টি জানতো এক বছরেরও বেশী আগে থেকে। তারা এটাকে ‘অভিযানের জন্য আবশ্যকীয়’ বলে মনে করতো এবং কেউ এটা বন্ধের চেষ্টা করেনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কথা উল্লেখ করে তিনি সতর্কবানী উচ্চারন করেন যে, সকল যুক্তিতেই আমরা হেগের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। এটা একটি অপরাধ (মানব ঢাল) এমনকি সামরিক বাহিনী তা স্বীকার করেছে।