বাংলাদেশে জাতিসংঘ মহাসচিবের তাৎপর্যপূর্ন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসের বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মানবিক বিপর্যয়ের দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষন করেছে।
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের দুর্ভোগ গুতেরেসকে গভীরভাবে বিচলিত করে। তিনি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীকে আশ্রয়দানের গুরুভার বহন করছে বাংলাদেশ, যা একটি তাৎপর্যপূর্ন কূটনৈতিক বিজয়। তবে কীভাবে এই শরনার্থীদের গ্রহন করবে মিয়ানমার, বিশেষভাবে আরাকান আর্মি, এ প্রশ্ন থেকেই যায়। আরাকান আর্মির প্রায় পুরো নিয়ন্ত্রনে এখন রাখাইন রাজ্য। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৮ টি শহরের মধ্যে ১১ টিতে তাদের ক্ষমতা সংহত বা প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই তাদের শক্তিকে অবজ্ঞা করা সম্ভব নয় কারো পক্ষে।
যা-ই হোক, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তাদের নীতি মারাত্মকভাবে বিভ্রান্তিকর। তারা রোহিঙ্গা শব্দটিও ব্যবহার করতে নারাজ, এই সম্প্রদায়ের বিশেষ পরিচিতিও মানতে রাজী নয় তারা। বরং তারা বিগত শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরনকে পুনরায় জোরদার করছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের আকাংখা সত্বেও আরাকান আর্মির রোহিঙ্গাদের পরিচয় স্বীকারে অস্বীকৃতি একটি বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে তাদের অস্তিত্বকে ক্ষুন্ন করছে। গুতেরেসের মন্তব্যগুলো ছিলো একটি স্পষ্ট সংকেত।
বিশ্বের এই কূটনীতিক একই সুরে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষসমূহকে অবশ্যই বৈশ্বিক বৈধতা অর্জনের কথা উল্লেখ করেছেন। রোহিঙ্গাদের অধিকারের পূর্ন স্বীকৃতি ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন অবশ্যই একটি আপোষহীন বিষয়। এই বার্তা বাংলাদেশে গভীরভাবে অনুরণিত হয়েছে, যেখানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের স্থবির প্রক্রিয়া নিয়ে হতাশা বেড়েই চলেছে। মিয়ানমারের সাথে উপর্যুপরি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সত্বেও রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে কোন অগ্রগতি হয়নি।
২০১৮ ও ২০১৯ সালে পুনর্বাসন প্রচেষ্টার ব্যর্থতা এটাই স্মরণ করিয়ে দেয়। নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া রোহিঙ্গারা ঝুঁকির মধ্যেই থেকে যাবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button