অভিবাসন সংক্রান্ত ১০০ অভিযোগের মাত্র ১ জনকে পুনর্বাসন
মনিরুজ্জামান: যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত হাজার হাজার অভিযোগের শতকরা মাত্র ১ জনকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এতে ইউকে বর্ডারের কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হোম সেক্রেটারী থেরেসা মে।
কিন্তু ইমিগ্রেশন ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এর প্রধান ডেভ উড বলেন পুনর্বাসনের হার স্বাভাবিক আছে।
হোম অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর জুন মাস পর্যন্ত ৪৮,৬৬০টি অবৈধ অভিবাস সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে কিন্তু মাত্র ৬৬০ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে হোম সেক্রেটারী থেরেসা মে বলেন, পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে আপিল করার প্রবণতা অনেক বেশী। এবং তাদের অধিকাংশ পার পেয়ে যাচ্ছে। হোম অফিসের ব্যার্থতায় তিনি পার্লামেন্টের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
কিন্তু ইমিগ্রেশন ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এর প্রধান ডেভ উড হোম সেক্রেটারীর মন্তব্যের বিরুদ্ধে এমপি’দের উদ্দেশ্যে বলেন, পুনর্বাসনের সংখ্যা স্বাভাবিক আছে। অভিবাসন সংক্রান্ত হাজার হাজার অভিযোগ আসলেও তথ্যগুলো শক্তিশালী নয়। দুর্বল অভিযোগের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আটক কর যায়না।
গত বছর সেপ্টেম্বার থেকে অ্যালিগেশন ম্যানেজমেন্ট সিসটেম(এএমএস) ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত অভিযোগ সংরক্ষন শুরু করেছে হোম অফিস। জানা যায়, ৪৮৬৬০টি অভিযোগে মাত্র ২৬৯৫ টি স্থানে অভিযান চালায় ইমিগ্রেশন অফিসাররা। তাদের ১৮৪০ জন আটক করা হয়েছে। পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে পার পেয়ে গেছেন ১১৮০জন। মাত্র ৬৬০জনকে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছে ইউকে বর্ডার। তথ্য বিশ্লেষন করে দেখা যায়, এবছর প্রথম তিন মাসে পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে আপিলের পরিমান ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কমিটির চেয়ারম্যান এবং এমপি কেইখ ভেজ এর এক প্রশ্নে জবাবে ডেভ উড বলেন, অধিকাংশ অভিযোগ দুর্বল হওয়ায় সকল ক্ষেত্রে আটক করা সম্ভব হয়না। উড আরো বলেন, গত বছরের তুলনায় পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে আপিলের পরিমান বেড়েছে। এবছরের প্রথম চার মাসে আপিল করেছে ৬৩৭জন কিন্তু গত বছর এই সময়ে আপিল জমা পড়েছিল ৪৪৮টি।
থেরেসা মে বলেন, অবৈধদের পুনর্বাসনে অনেক সময় নিচ্ছে হোম অফিস। পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পদ্ধতি বিশ্লেষনে এমপিদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, কিভাবে এত বেশী অভিবাসী পার পেয়ে যাচ্ছে? হোম অফিসের উচিৎ তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। তিনি আরো বলেন, আপনারা আবাক হবেন যে, অভিবাসীরা এক রুটে আবেদন করে খালাস না পেলে ভিন্ন রুটে আবেদন করছে। যে কোন ভাবে তারা এদেশে অবস্থান করছেই। পুনর্বাসনে হোম অফিসের দুর্বল কার্যক্রমকে সরকারের কাছে ব্যর্থতার সিগন্যাল হিসেবে প্রেরণ করেন তিনি।
এদিকে, যেসব ল্যান্ডলর্ড অবৈধদের স্থান দিচ্ছে তাদের প্রতি হুশিয়ারী দিয়েছেন ডেভ উড। জানা যায়, ইউকে বর্ডার এজেন্তি(ইউকেবিএ) বিলুপ্ত হওয়ার পর ইমিগ্রেশন ইনফোর্সমেন্ট এর অন্তবর্তিকালীন প্রধান হিসেবে যোগদান করেছিলেন ডেভ উড। তার পর থেকে অভিবাসীদের পুনর্বাসনে গতি কমেছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।