যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একাট্টা ইইউ নেতৃবৃন্দ

USযুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের আড়িপাতার ঘটনায় দারুণ ক্ষুব্দ পশ্চিমা বিশ্ব। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল এর ফোন ছাড়াও বিশ্বের আরো ৩৫ নেতার ফোনে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়ান্দাগিরির তথ্য ফাঁসে এবার একাট্টা হয়েছে  ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। কেবল বিশ্ব নেতারাই নন ফ্রান্স ও জার্মানের লাখো নাগরিকের যোগাযোগে আড়িপাতার অভিযোগ উঠে এসেছে এবার।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্র যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, যা ঘটছে তাতে বিশ্ব নিরাপদ নয় তারি আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, স্নোডেন যা করছে এবং তার সাথে কিছু পত্র-পত্রিকা যে সহযোগিতা যোগাচ্ছে  তা সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে গোয়েন্দাদের জন্য।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাদে বলেছেন, যা ঘটছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের সম্পর্ক ঝুঁকির পথেই চলে যাবে। আমাদের উচিত সম্পর্কের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা ও পুন:স্থাপন করা।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী এনরিকো লিটা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের এরকম আড়িপাতা কিছুেেতই মেনে নেয়া যায় না এবং এটি অগ্রহণযোগ্য।
গতকাল শুক্রবার ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সম্মেলন শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ গোয়ান্দাগিরি কার্যত সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলাকেই বাধাগ্রস্থ করবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। ইতিমধ্যে ফ্রান্স ও জার্মান ঘোষণা করেছে তাদের এ বছরের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের গোয়েন্দাগিরি বন্ধের জন্য একটি চুক্তি সাক্ষর করবে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি হেরম্যান ভেন রম্পুই এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় এ ধরনের সম্মেলন খুবি গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইউরোপীয় অন্যান্য সহযোগি দেশের সম্পকের্র বিষয়টি এখন বিবেচনার দাবি রাখে। তিনি বলেন, বিশ্বাসের ঘাটতি থাকলে তা এক দেশের সাথে আরেক দেশের সম্পর্ক পুনরায় বিচার করারি ইংগিত বহন করে।
এদিকে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল এর ফোনে আড়িপাতার ঘটনা অধিকতর তদন্ত করতে জার্মান তাদের গোয়েন্দা প্রধানকে যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়েছে। জার্মান সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন,  গোয়েন্দা প্রধান যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা সংস্থা এবং হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এ গোয়েন্দাগিরির ঘটনায় দারুণ ক্ষুব্দ স্পেন ও জার্মান আর ফ্রান্সের মতো যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। এদিকে ইতালিও একই পথ অনুসরণ করছে বলে জানা গেছে।  মিত্রদের এরকম অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, আড়িপাতার কাজ কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয় অন্য দেশও করতে পারে। আসুন আমরা এর জন্য একসাথে কাজ করি। এবং একটা পরিবর্তন নিয়ে আসি।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন পেসকি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক গোয়েন্দা এডওয়ার্ড স্নোডেন এর মত কিছু কর্মকর্তা এ মুহূর্তে আমাদের সাথে মিত্রদেশের এরকম উত্তজেনাকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের মিত্রদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। এটি অব্যাহত আছে। আর জার্মান এর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা বিষয়টি নিয়ে এখন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাথে বসছেন।
জেন পেসকি বলেন, উচ্চ পর্যায়ের এ বৈঠক জনগণের সাথে বিশ্বাস বজায় রাখার মান ধরে রাখতে অধিকতর আলোচনা করবে। এ অবাধ তথ্যপ্রবাহের সময়ে কিভাবে বিশ্বের সাথে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ রাখা যায় তাও আলোচনা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এনএসএ শুক্রবার তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, কিছু হ্যাকিং গ্রুপ এ ধরনের তথ্য বাইরে ফাঁস করে থাকতে পারে।
বৃটিশ পত্রিকা দ্যা গার্ডিয়ান বৃহস্পতিবার জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ২০০৬ সালে বিশ্বের ৩৫ নেতার যোগাযোগে আড়িপাতে। পত্রিকাটির কাছে তার বিশ্বস্থ প্রমাণ রয়েছে।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে বিশ্বনেতাদের মোবাইল ও ফোন নাম্বার সরবরাহে উৎসাহিত করে। যাতে করে গোয়েন্দারা ঐসব নেতাদের ফোনে আড়িপাততে পারে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button