বিশ্বের ৩৫ নেতার ফোনে আড়ি পেতেছিল যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ জন নেতার ফোনে আড়ি পেতেছিল বলে জানা গেছে। সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষক অ্যাডওয়ার্ড স্নোডেনের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। স্নোডেনের ফাঁস করা নথিপত্র থেকে দেখা গেছে, সরকারি অন্য একটি অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাকে (এনএসএ) ফোন নম্বরগুলো হস্তান্তর করে। নথি থেকে আরো জানা গেছে, বিদেশি রাজনীতিবিদদের বিস্তারিত যোগাযোগের তথ্যগুলো হোয়াইট হাউস, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পেন্টাগনের কর্মীদের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার আহ্বানও জানানো হয়।
গার্ডিয়ান জানায়, ২০০৬ সালের অক্টোবরের তারিখ দেয়া একটি গোপন মেমোতে ছিল, সামপ্রতিক একটি ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বিশ্বের ৩৫ জন নেতার ২০০টি ফোন নম্বর এনএসএকে সরবরাহ করেছে। তবে ওই নেতাদের পরিচয় গার্ডিয়ান প্রকাশ করেনি। এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার সব ধরনের কার্যক্রম নিয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে যাচ্ছি না। আর যদি নীতির প্রশ্ন ওঠে তবে আমরা পরিষ্কার করে জানাতে চাই, অন্যান্য দেশ যে ধরনের বিদেশি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্রও সেই ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছে।’ এদিকে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় এক দশকের মধ্যে মিত্র দেশ দু’টির সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চাওয়ার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে জার্মান কর্তৃপক্ষ। জার্মানিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জন এমারসনের সঙ্গে কথা বলবেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গুইদো ভেস্তারভেলে। দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে এমন পদক্ষেপ বিরল বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, চ্যান্সেলর মেরকেল ফোনে আড়িপাতার ঘটনার পরিপূর্ণ ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, এ ধরনের গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনা সত্য প্রমাণিত হলে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এ কাজ স্পষ্টতই নিন্দনীয় বলে গণ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই গোয়েন্দাবৃত্তির অভিযোগ কোথা থেকে পাওয়া গেছে জার্মান সরকার তা বলেনি। কিন্তু সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা নিউজ ম্যাগাজিন ‘দার স্পাইগেল’ জানিয়েছে, তাদের তদন্ত থেকে এ তথ্য এসেছে। হোয়াইট হাউজ আড়িপাতার বিষয়টি অস্বীকার না করে জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।