সেই রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর আজ (ভিডিও)

আজ আবার সেই ২৮ অক্টোবর। বাংলাদেশের রাজনীতির ঘটনাবহুল রক্তাক্ত একটি দিন। সেই লগী-বৈঠার আন্দোলনের দিন। বহুল আলোচিত-সমালোচিত সেই ১/১১ সৃষ্টির প্রথম পদক্ষেপ নেবার দিন। ।
আজ থেক ঠিক ৭ বছর আগে ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের পালাবদলের শেষ দিন এই ২৮ অক্টোবর। আজই সেই ব্যাপক আলোচিত লগী-বৈঠার আন্দোলনের দিন। এইদিনেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংস ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারায় ১৩ জন। আহত হয় কয়েকশ’ মানুষ।
কালের চক্রে এবার এমন এক সময় ২৮ অক্টোবর আসছে যখন ক্ষমতার পালাবদলের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকে টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি চলছে। আর এর প্রথম দিনে সারা দেশে সংঘর্ষে উভয় জোটের অন্তত ৭ জন নিহত ও কয়েক হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
২০০৬ সালের ওইদিন পল্টন ময়দানে আওয়ামী লীগের অবরোধ কর্মসূচি ছিল। বিএনপি কর্মসূচি পালনে অবস্থান নেয় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। আর জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচি ছিল বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে।
মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নিজ নিজ দলের কর্মসূচিস্থলে আসতে থাকে। এক পর্যায়ে পল্টনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের কর্মীদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
মুহূর্তের মধ্যে গুলি, ইটপাটকেল ও লগি-বৈঠার মিছিলে পুরো পল্টন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুপুরের পর সংঘর্ষ আরো মারাত্মক রূপ নিলে অসহায় পুলিশ পিছু হটে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেয়।
ওইদিনের লগী-বৈঠার তান্ডবে রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ছয়জন এবং ছাত্রমৈত্রীর একজন কর্মী প্রাণ হারায়। প্রকাশ্যে পিটিয়ে মানুষ হত্যার পর লাশের ওপর উঠে নৃত্যের মতো ঘটনা ওইদিন টেলিভিশনের লাইভ সম্প্রচারের ফলে মানুষ দেখতে পায় রাজনীতির নামে এক বিভৎস রূপ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সৃষ্টি হয় এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
এরপর ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পল্টন ও শাহবাগ থানায় পৃথক পাঁচটি মামলা করা হয়। তবে একটি মামলাও আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে পল্টন থানায় দায়ের পাল্টাপাল্টি দুটি মামলার একটি ইতোমধ্যেই বর্তমান সরকার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ওই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা আসামি ছিলেন।
২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষে পল্টনে জামায়াত-শিবিরের নিহত নেতাকর্মীরা হলেন- মোজাহিদুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন (১), জসিম উদ্দিন (২), গোলাম কিবরিয়া শিপন, ফয়সাল ও হাবিবুর রহমান। একই সময় পল্টন মোড়ে নিহত হন ছাত্রমৈত্রীর খিলগাঁও থানা সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান। এদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয় গুলিতে। আর বাকি দুজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় লগী-বৈঠা দিয়েই।
সহিংস ঘটনায় পল্টন ও এর আশপাশের এলাকাতেই আহত হয়েছেন কমপক্ষে এক হাজার মানুষ।
সাত বছর পর আজ আবার সেই ২৮ অক্টোবরে রাজপথে মুখোমুখি বিপরীত দুই পক্ষ। এবিষয়ে ছাত্রশিবিরের একাধিক নেতা জানান, ২৮ অক্টোবর তাদের জন্য শোকের দিন। এদিনটিকে তারা পালন করবে তাদের মতো করেই। এখানে কোনো বাধা তারা বরদাশত করবে না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button