ঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য
ঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য । সোমবার ব্যাপক ঝড়ের কারণে যুক্তরাজ্যে যোগাযোগব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় আবহাওয়াকেন্দ্র জানায়, ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে গত রোববার রাতে ওই ঝড় আঘাত হানে। এতে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে যায় এবং ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও যোগাযোগব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসে। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা পড়ে অন্তত ৪০টি রেলপথ বন্ধ হয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলে গতকাল সকালে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চলাচলকারী অধিকাংশ ট্রেন বাতিল করা হয়। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ হাজার বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ঝড়ের পরবর্তী ছয় থেকে নয় ঘণ্টার মধ্যে ২০ থেকে ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে। এতে আশপাশে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও সাউথ ওয়েলসের ওপর দিয়ে ১৫৯ কিলোমিটার (৯৯ মাইল) বেগে দমকা হওয়া বয়ে যেতে পারে।
খারাপ আবহাওয়া ও সম্ভাব্য বিড়ম্বনা এড়াতে লোকজনকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে গতকাল সকালে নির্ধারিত যাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। উপকূলীয় রক্ষীবাহিনী কোস্টগার্ড জানায়, ইস্ট সাসেক্সের একটি সৈকত থেকে নিখোঁজ ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
এদিকে, রেলওয়ে পরিচালনা প্রতিষ্ঠানগুলো আবহাওয়া ঠিক হওয়ার আগ পর্যন্ত নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে যাত্রীদের বিড়ম্বনা হতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে হিথ্রো, গ্যাটউইকসহ কয়েকটি বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের প্রায় ৩০টি ফ্লাইট বাতিলের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে সর্বোচ্চ ১৩৯ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া হয়। এতে কয়েকটি এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনে বিঘ্ন ঘটে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন ইউরোস্টার গতকাল সকালের যাত্রা বন্ধ রাখে। ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৭৫ হাজার বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। গত এক দশকের মধ্যে এটি এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এদিকে, আইরিশ সাগর অতিক্রমকারী ফেরি চলাচলও গতকাল বন্ধ রাখা হয়।
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে ২০০২ সালের অক্টোবরেও প্রায় একই ধরনের ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল। যুক্তরাজের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন রোববার জরুরি ভিত্তিতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। ১৯৮৭ সালে ‘ব্যাপক ঝড়ে’ যুক্তরাজ্যে ১৮ জন ও ফ্রান্সে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে এবারের ঝড়ের ভয়াবহতা এতটা তীব্র হবে না বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।