নির্দলীয় সরকার নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপনের চেষ্টা করব : সাইমন ডেন্সজাক এমপি
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য এবং বাংলাদেশবিষয়ক অলপার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের অন্যতম সদস্য সাইম ডেন্সজাক বলেছেন, বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যে পার্লামেন্টের আসন্ন অধিবেশনে একটি প্রস্তাব উত্থাপনের চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে যুক্তরাজ্য সব সময় বাংলাদেশে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায়। পাশাপাশি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাজ্যের মানচেস্টার কাউন্টির অধিনস্থ মিডলটন শহরে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইমন ডেন্সজাক একথা বলেন। কমিটি ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ইউকে-এর উদ্যোগে গত ২৭ অক্টোবর রবিবার লা মিনহাজ রেস্টুরেন্টে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কার্ডিপ ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক ড. কে এম এ মালেক। সংগঠনের সভাপতি ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সাংগটনিক সম্পাদক মোশাহিদ হোসাইনের সভাপতিত্বে ,ইঞ্জিনিয়ার জাকি মোস্তফা টুটুল ও যুক্তরাজ্য যুবদলের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক কবিরুল হক কবিরের যৌথ পরিচালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কাউন্সিলর অ্যালান জনসন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এমএ মালেক, যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান, প্রফেসর মহসিন চৌধুরী, কাউন্সিলর ফারুক আহমদ, কাউন্সিলর শেফালী আহমদ, ,মইনুদ্দিন আহমেদ, জমিরুল হক,এমদাদুল হক চৌধুরী,সিরাজুল ইসলাম, শাহ কাইয়ুম হাবিবুর রহমান কাইয়ুম, মাসুদ আহমেদ, আলী আহমেদ,সদল ইসলাম ফয়সল আহমদ মাসুম, আবিদুর রহমান আরজু, মুজিবুর রহমান,সায়েক মিয়া প্রমুখ।
সাইমন ডান্সজাক বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র কখনো শক্তিশালী হতে পারে না। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে গণমানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন নির্বাচনে দেখতে হলে নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য দরকার নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে এমন সরকার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণমাধ্যম প্রসঙ্গে উল্লেখ করে সাইমন ডান্সজাক বলেন, সেমিনারে উপস্থিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানের পরিণতি হচ্ছে গণমাধ্যম পরিস্থিতির বড় উদাহরণ। তিনি বলেন, অলিউল্লাহ নোমান সত্য লেখার কারণে সরকারি রোষানল থেকে রক্ষা পেতে যুক্তরাজ্যে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এতেই বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার একটি চিত্র এখানে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা ছাড়া কোনো গণতন্ত্র হতে পারে না। গত মাসখানেক আগে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের অলপার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ৫ সদস্যের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাত্র কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে গার্মেন্ট শিল্পে নৈরাজ্যকর অবস্থা দেখা গেছে। সাভারে রানা প্লাজা পরিদর্শনে যাওয়ার পথে রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি সংবলিত বিলবোর্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সাইমন বলেন, এসব দেখেই বোঝা যায় একটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতাদের এমন বিলবোর্ড বাইরের দেশগুলোতে রং ম্যাসেজ দিচ্ছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হলে, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, স্বাধীন গণমাধ্যম এবং শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।
মূল প্রবন্ধে ড. কে এম এ মালেক বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার সঙ্কটের মুখে পড়ে। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে হত্যা এবং সকল রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম নিষিদ্ধ করেন। তিনি বলেন, তার কন্যাও এখন একই পথে হাঁটছেন। সত্য উচ্চারণ করায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হচ্ছে। গণহত্যা সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানকে তার দলের সদস্যরাই হত্যা করেছিল। খন্দকার মুশতাক আহমদ আওয়ামী লীগের অনেক বড় নেতা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহযোগী ছিলেন। এরশাদও গণতন্ত্র হত্যা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা প্রতিটি সামরিক সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে। এতেই প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাই তারা আবারো একদলীয় শাসন কায়েমের পথে হাঁটছে।
বিএনপি নেতা এমএ মালেক বলেন, গণতন্ত্রের দাবিতেই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। অথচ স্বাধীনতার পরপরই গণতন্ত্র হরণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমানে গণতন্ত্র সঙ্কটের মুখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা পরাজিত হবে। এজন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে চাচ্ছে না। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
উপস্থিত অন্য বক্তারাও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। সেমিনারে ম্যানচেস্টার কাউন্টির বিভিন্ন শহর থেকে বাংলাদেশীরা অংশ নেন।
হাসিনা প্রতিটি সামরিক সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে। এতেই প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাই তারা আবারো একদলীয় শাসন কায়েমের পথে হাঁটছে।
বিএনপি নেতা এমএ মালেক বলেন, গণতন্ত্রের দাবিতেই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। অথচ স্বাধীনতার পরপরই গণতন্ত্র হরণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমানে গণতন্ত্র সঙ্কটের মুখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা পরাজিত হবে। এজন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে চাচ্ছে না। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
উপস্থিত অন্য বক্তারাও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। সেমিনারে ম্যানচেস্টার কাউন্টির বিভিন্ন শহর থেকে বাংলাদেশীরা অংশ নেন।