গণতন্ত্রের স্বার্থে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় বৃটেন

Bishwaএনাম চৌধুরী: বৃটিশ পার্লামেন্টের অল পার্টি পার্লামেন্টারী গ্রুপ অন বাংলাদেশের চেয়ার অ্যান মেইন এমপি বলেছেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় বৃটেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল দলের অংশগ্রহণ ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব একটি  গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে সমঝোতায় আসা উচিত, তা হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে।  তিনি বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে বাংলাদেশের জনগণের সদিচ্ছাকে গুরুত্ব দেয়া জরুরী। বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ যে পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় সে পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। অ্যান এমপি বলেন, কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে অতীতে উভয়ই পক্ষই সমান আগ্রহী ছিলেন এবং এই পদ্ধতিতে নির্বাচন করে উভয়পক্ষই ক্ষমতায় গিয়েছে। তাই জনগণের মতামতকে মূল্যায়ন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সমুন্নত করতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। গত ২৮ অক্টোবর বৃটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে মানবাধিকার সংগঠন হিউহোপ আয়োজিত – ভায়োলেশন অব হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ- শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
নিউহোপ চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন এমবিই-র সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী এনাম চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বাংলাদেশের মানবাধিকার ও তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে অভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেন বৃটিশ এমপি ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এমপিরা।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এমপি ব্যরোনেস সারা লোডফোর্ড এমইপি, জন হেমিং এমপি, শাবানা মাহমুদ এমপি, জন হেমিং এমপি, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির উপদেষ্টা এম এ মালেক,  বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আজমল মাশরুর, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের ডিফেন্স ল-ইয়ার এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াতে ইসলাম ইউরোপের মূখপাত্র ব্যারিষ্টার আবু বকর মোল্লা,শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান।
ব্যরোনেস সারা লোডফোর্ড এমইপি বলেন, এশিয়ার সম্ভাবনাময় দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। এ দেশটির গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে দেশ অনেক দুর এগিয়ে যেতো। বাংলাদেশ বিষয়ে ইউরোপীয়ান দেশগুলোর অবস্থান স্পষ্ট। আমরা মনে করি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হলে সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের মতামতের মূল্যায়ন করতে হবে।
জন হেমিং এমপি বলেন, বৃটেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষা আশা করে। বাংলাদেশে যদি সরকার ও বিরোধী দল আলোচনার মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে তবে দেশ অনেক দুর এগিয়ে যাবে।
শাবানা মাহমুদ এমপি তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার যতদুর মনে হয় বাংলাদেশের জনগণের  কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধকি অধিক জনপ্রিয়, এখন সেটা নিয়ে বাংলাদেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার ও বিরোধী দল কার্যকর সংলাপের মাধ্যমে বর্তমান সমস্যার সমাধান করে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আজমল মাশরুর বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার চরমভাবে বির্পযস্ত। এজন্য ক্ষমতাসীনরাই মূলত দায়ী। তিনি বলেন সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যেমন রাজনৈতিক সমঝোতা নেই তেমনি নেই নুন্যতম বিশ্বাসের সম্পর্ক।  তিনি যুদ্ধাপরাধ ট্র্যাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর রায় সম্পর্কে বলেন, শোনা স্বাক্ষীর ভিত্তিতে রায় দিয়ে যেমন আইনকে অসম্মান করা হয়েছে তেমনি সম্মানিত একজন আলেমের প্রাণনাশের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধী ট্র্যাইব্যুনালের ডিফেন্স ল- ইয়ার মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, যেখানে প্রকাশ্যে দিবালোকে আদালতের সামনে থেকে স্বাক্ষী অপহরণ করা হয়, ডিফেন্স আইনজীবিদের অফিস, বাসা পুলিশি হামলার হাত থেকে রক্ষা পায় না সেখানে বাংলাদেশে আইনের শাসন রয়েছে তা কোনভাবেই বলা যায় না। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন নিউহোপ এর এক্সিকিউটিভ মেম্বার ডা. সালেহা জেবা,  ফয়সল আহমেদ, কামাল আহমেদ, বিএনপি নেতা খসরুজ্জামান খসরু, শরীফুল ইসলাম সবুজ, বাকিংহাম ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী লামিছ উদ্দিন প্রমূখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button