সিলেটে আ.লীগের প্রার্থী কামরান, বিভাগের আরো ৫টি আসনে নতুন মুখ
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। ৩০০ আসনের মধ্যে প্রায় ১০০টি আসনে এবার প্রার্থী বদল করেছে দলটি। তবে প্রার্থী চূড়ান্তকরণে আওয়ামী লীগ কৌশল অবলম্বন করেছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়া ও না নেয়ার উপর নির্ভর করে প্রার্থীদের দুইটি তালিকা চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। আর আওয়ামী লীগ পুণরায় ক্ষমতায় গেলে ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত হবেন টেকনোক্রেট মন্ত্রী। এছাড়াও সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে আরো ৫টি আসনে প্রার্থী বদল হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সিলেট বিভাগে যেসব আসনে প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ চূড়ান্ত করা হয়েছে সেগুলো হলো সিলেট-১ আসনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পরিবর্তে সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, মৌলভীবাজার-৪ আসনে হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদের স্থলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর দেব, সুনামগঞ্জ-১ আসনে বর্তমান সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের স্থলে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রণজিত সরকার, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বর্তমান সাংসদ মতিউর রহমানের স্থলে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট, হবিগঞ্জ-১ আসনে উপ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. মুশফিক চৌধুরীর পরিবর্তে সাবেক মন্ত্রী ফরিদ গাজীর ছেলে শাহনেওয়াজ গাজী (মিলাদ গাজী), হবিগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান এমপি আবু জাহিদের স্থলে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের জানান, ১০ নভেম্বর থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়পত্র বিক্রি শুরু হবে। এরপর দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বৈঠক করে এদের মধ্য থেকে বাঁছাই করবেন।
প্রার্থীতার তালিকা তৈরিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি থাকবে কী না তা এখনো পরিস্কার না হওয়ায় তিন’শ আসনে প্রার্থী তালিকা শতভাগ চূড়ান্ত করতে আরেকটু সময় নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এবার প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করনের বিষয়টি স্বয়ং দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দেখভাল করছেন। এক্ষেত্রে তিনি সরকারি ২ টি গোয়েন্দা সংস্থা, নিজের ব্যক্তিগত টিমের জরিপসহ বাইরের আরো দু’টি জরিপ রিপোর্টের সমন্বয়ে চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাই করছেন।
এসব রিপোর্টের প্রেক্ষিতে প্রায় এক’শ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্যকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়ার বিষয় চূড়ান্ত করেছেন শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে এসব সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন না দেয়ার বিষয়টিও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক প্রভাবশালী সদস্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে বিএনপি নির্বাচনে না এলে পাল্টে যাবে অনেক হিসাব নিকাশ। সে ক্ষেত্রে কিছু আসনে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে। আবার এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনার গুডবুকে থাকলেও নানা কারনে শেষ মুহূর্তে অনেকের মনোনয়ন অনিশ্চিত হতে পারে।
আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা প্রাধান্য দিচ্ছেন ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের। দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন না দিয়ে একক নির্বাচন করলেও সেটা দেশের সুশিল সমাজ ও বর্হিবিশ্ব ভাল নজরে দেখবে বলে জানান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য এইচ টি ইমাম।