হাউস অব লর্ডসের সেমিনারে বিএনপি-আ.লীগ
বাংলাদেশের যে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে রাজনৈতিক দলগুলোকেই তার সমাধান খুঁজতে হবে বলে মত দিয়েছেন যুক্তরাজ্য অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের কো-চেয়ার লর্ড এ্যাভুবারী।
বুধবার লন্ডন স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের কমিটি রুমে বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ থেকে আগত বক্তারাও দেশে সুশাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের উন্নয়নে একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
হাউস লর্ডসের প্রভাবশালী সদস্য লর্ড এ্যাভুবারীর আমন্ত্রণে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি সঞ্চালনা করেন অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের বাংলাদেশ বিষয়ক চেয়ার এ্যান মেইন এমপি। সভায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একাধিক এমপি, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এমপি, লর্ড, ব্যারোনেস ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিদের বক্তব্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্নীতি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে নিরাপদ কাজের পরিবেশ সৃষ্টি, প্রতিহিংসার রাজনীতি, বিরোধী দলকে হয়রানি ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে।
সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবদুল মতিন খসরু, সাবের হোসেন চৌধুরী, তারানা হালিম এমপি ও দীপঙ্কর তালুকদার।
অন্যদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নাসির উদ্দীন অসীম, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও নিতাই রায় চৌধুরী। দুই ঘণ্টাব্যাপী বিতর্কে উভয় রাজনৈতিক দলই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার পরিবর্তনে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করলেও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংখ্যালঘু নির্যাতনের দায়ভার বিএনপির নয়, মন্তব্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তোলেন।
এইচটি ইমাম হেফাজতে ইসলামের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, যেভাবে তারা অগ্নিকাণ্ড, হত্যায় মেতেছে মনে হয় তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে।
লর্ড এ্যাভুবারি বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সমস্যাগুলো উত্তরণ ঘটিয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্তে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করবে সেটাই ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাশা করে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে প্রায়ই এ ধরনের সেমিনার আয়োজন করে থাকে হাউস অব লর্ডস। ২০১০ সালে এমন একটি সভায় সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন যুক্তরাজ্য বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।