আমি নিজে কিছু বলতে চাই না, আল্লাহর পক্ষ থেকে তারা জবাব পেতে থাকবেন : আল্লামা শফী
ওমরাহ পালন শেষে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী গত বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটায় দেশে ফিরেছেন। চট্টগ্রাম শাহ আমানত (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মহানগর হেফাজতের নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। ৪ জুলাই ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সউদী আরব গমনের দু’সপ্তাহ পর তিনি দেশে ফিরলেন। মক্কা শরীফে ওমরাহ পালন ও পবিত্র মদীনা মুনাওওয়ারায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরীফ জিয়ারত শেষে তিনি সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় সউদী গ্র্যান্ড মুফতি শায়েখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়েখ-এর সাথে তিনি সাক্ষাতে মিলিত হন। আলে শায়েখ সউদী সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ সভাপতি এবং আরাফাতের ময়দানে হজের দিনের খতিব ও ইমাম। রিয়াদের নদওয়ায় শুরা কাউন্সিলের প্রতিনিধির সাথেও আল্লামা আহমদ শফীর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মক্কা, মদীনা, রিয়াদ ও জেদ্দায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের বেশ কিছু কর্মসূচিতে আল্লামা শফী যোগদান করেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি, তৌহিদী জনতার ঈমানী আন্দোলন, ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদ চক্রের নানাবিধ অপতৎপরতা প্রসঙ্গে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে মতবিনিময় করেন। আল্লামা শফীর সফরসঙ্গী শায়েখ আনাস মাদানী, মাওলানা হাফেজ মুজ্জাম্মিল, মাওলানা শফী ছাড়াও সউদী আরব প্রবাসী বিশিষ্ট ওলামা-মাশায়েখগণ তার সাথে এসব কর্মসূচিতে শরিক হন। হেফাজতে ইসলাম মদীনা শাখার সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, রিয়াদ শাখার সভাপতি, মাওলানা হেলালুদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রেজাউল করিমসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী তার সফরসঙ্গী হিসেবে সউদী আরবের বিভিন্ন নগরীতে হওয়া কর্মসূচিতে অংশ নেন।
গত বুধবার রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেই সাহরি সেরে আল্লামা শফীকে নিয়ে নেতাকর্মীদের গাড়িবহর হাটহাজারির উদ্দেশে রওনা হয়। দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে স্থানীয় হেফাজত নেতৃবৃন্দ সংক্ষেপে অবহিত করেন। তিনি পবিত্র রমজান মাসে সর্বক্ষেত্রে সকলকে সংযম পালনের উপদেশ দেন। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে পবিত্র ভূমিতে বিশেষভাবে দোয়া ও মোনাজাত করেছেন।
আল্লামা শফী পবিত্র রমজানে কুরআন তিলাওয়াত, তাফসির, মুরিদ-মু’তাকিদদের আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ, ঈমানী আন্দোলনে সম্পৃক্ত নেতাকর্মীদের জরুরি নির্দেশনা প্রদান ও বিশেষ ইবাদত বন্দেগীর মধ্যেই অতিবাহিত করবেন। হাটহাজারি মাদরাসা মসজিদে ২১ রমজান থেকে ইতেকাফেও বসবেন তিনি। তার একটি ওয়াজের ভিডিও নিয়ে সারাদেশে যে তোলপাড় চলছে এ প্রসঙ্গে তার ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে তিনি বলেন, ভিডিওটি আমার নয়। কারা কোত্থেকে, কী উদ্দেশ্যে এটি প্রচার করছেন, সেটাও আমার কাছে স্পষ্ট নয়। আমাকে বিদেশে রেখে এসব হচ্ছে। শুনলাম, লাখ লাখ কপি বানিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাবও প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবে তিনি সায়ও দিয়েছেন। রাজপথ থেকে সংসদ সর্বত্রই এ নিয়ে হৈ চৈ। আমি রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে সকলকে সংযত হতে বলবো। যারা মিথ্যা ছড়ায়, পরনিন্দা ও অপবাদচর্চা করে তারা অচিরেই লজ্জিত ও অনুতপ্ত হবে। মিথ্যার দাপট ক্ষণস্থায়ী, সত্যের গৌরব চিরস্থায়ী। মিথ্যাচার, অন্যায়-অপবাদ, নিন্দা ও সমালোচনার জবাব হিসেবে নীরবতা সর্বোত্তম। অশালীন মন্তব্য ও বেয়াদবীপূর্ণ উক্তির জবাবে আমি নিজে কিছুই বলতে চাই না। আল্লাহর পক্ষ থেকে তারা জবাব পেতে থাকবেন। তৌহিদী জনতা ধীরে ধীরে এসবের জবাব দিতে থাকবে। আমি শুধু বলবো, প্রত্যেকেই আল্লাহকে ভয় করে চলুন। নিজ কথা, কাজ ও ভূমিকার জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহির জন্য তৈরি থাকুন।