বাংলাদেশের রাজনীতি যেন ‘পুতুল নাচ’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার টেলিফোনে ৩৭ মিনিট কথোপকথনের বিষয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের ‘দি ইকোনমিস্ট’ পত্রিকা। ওই কথোপকথনকে ‘বৃথা’ ও স্রেফ ঝগড়া’ আখ্যায়িত করে পত্রিকাটি বলেছে, ইতিহাস সৃষ্টির সুযোগ হারালেন দুই নেত্রী। পত্রিকাটির চলতি সংখ্যায় নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
নিবন্ধটির শুরুতেই বাংলাদেশের রাজনীতিকে পুতুল নাচের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। তবে এই পুতুল খেলাটি যেনতেন নয়, নিষ্ঠুর। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে নিবন্ধটিতে। এভাবে শুরুর পর নিবন্ধটিতে বাংলাদেশকে ১৫০ মিলিয়ন জনসংখ্যা অধ্যুষিত একটি দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে প্রায় দু’দশক ধরে পালাবদল করে শাসনক্ষমতায় থাকা দুই নারীর মধ্যে অনেকদিন পর একটু আলাপচারিতার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে ইতোমধ্যেই টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা দেয়া হয়ে গেছে। আর দু’নেত্রীর আলাপ শুরু হলো খালেদা জিয়ার বাসার রেড টেলিফোন নিয়ে। আর রেড টেলিফোন নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে তারা দীর্ঘদিনের কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি ছেড়ে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করার সুযোগ হারালেন, এমনটিই বলেছে ইকোনমিস্ট। ফোনালাপে তারা নেতৃত্ব, রাষ্ট্রনায়কোচিত আচরণ ও রাজনৈতিক সমঝোতার কোনো বালাই রাখলেন না।
ইকোনমিস্টের মতে, ফোনে খরচ করা ৩৬টি মিনিটই তারা বৃথাই কাটিয়ে দিলেন। দেশের চলমান সংকট নিয়ে আলোচনার কোনো সম্ভাবনা তৈরি না করে তারা কথা বললেন রেড টেলিফোন নিয়ে, ডিনারের মেন্যু নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্টে খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার জন্যও তাকে (খালেদা জিয়া) দোষারোপ করলেন।
ইকোনমিস্ট খুব মজা করেই লিখেছে, ফোনালাপটি ছিল দু’জন বিবাহিত বয়স্ক মহিলার মধ্যে স্রেফ ঝগড়া ছাড়া আর কিছুই নয়। দুজন বয়স্ক মহিলার ঝগড়া চলতেই থাকলো, কিন্তু ইতোমধ্যেই হরতাল আহ্বান করা হয়ে গেছে। ৬০ ঘণ্টার টানা হরতালে ঝড়ে গেল ১৩টি তাজা প্রাণ, আহত হলেন ও পঙ্গুত্ব বরণ করলেন হাজারখানেক তরুণ-যুবা। রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশটি হয়ে পড়েছিল ক্রুড বোমায় (ককটেল) পরিপূর্ণ। বিএনপিও এই ফাঁকে নিজের শক্তিটুকু দেখানোর চেষ্টা করলো। দেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপ মতে, আগামী নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটই জিততে যাচ্ছে। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে যা করার দরকার তাই করতে চায়।