আমি এখনো বৈধ প্রেসিডেন্ট : আদালতে মুরসি
মিসরের প্রথম অবাধ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সোমবার আদালতে উপস্থিত করা হলে তিনি বলেছেন, তিনি এখনো দেশের বৈধ নেতা এবং তিনি এই বিচার মানেন না। আর মুসলিম ব্রাদারহুড জানিয়েছে, তারা যেহেতু এই বিচার কার্যক্রমকে সমর্থন করেন না, তাই তারা মুরসির পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগ করবেন না। আদালত ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। মুরসিকে হেলিকপ্টারে করে অজ্ঞাত সামরিক অবস্থান থেকে কায়রোর পুলিশ একাডেমিতে স্থাপিত আদালতে হাজির করা হয়। সামরিক অভ্যুত্থানের পর এটাই তার প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল। আদালতকক্ষ থেকে ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা গেছে, মুরসি আসামির পোশাক পরতে অস্বীকার করায় এবং অন্যান্য আসামি বিচারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকায় বিচারক বিচারকাজ মুলতবি করেন। আল জাজিরার সু তারতন কায়রো থেকে বলেন, মুরসি তার স্যুট পরিহিত অবস্থায় আদালতে হাজির হয়েছেন। তবে ব্রাদারহুডের অন্য যেসব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়, তাদের পরনে আসামিদের ব্যবহৃত পোশাক ছিল।
মিসরের সরকারি বার্তা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ইউএস টুডে জানিয়েছে, মিসরের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বিচার শুরু হলে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে অনমনীয় দেখা যায়। তিনি তার বিচারের জন্য গঠিত আদালতকে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে তিনি এখনো দেশের ‘বৈধ প্রেসিডেন্ট’। কর্মকর্তারা আরো বলেন, মুরসি বলেছেন, তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত মামলার কার্যক্রম প্রত্যাখ্যান করছেন। আদালতের অভ্যন্তরে উপস্থিত কর্মকর্তারা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এসব কথা বলেন। তারা বলেন, তাদেরকে মিডিয়ার সামনে কথা বলার অনুমতি দেয়া হয়নি। সামরিক অভ্যুত্থানে মুরসি ক্ষমতাচ্যুৎ হওয়ার চার মাস পর তার বিচার শুরু হলো। মুরসি এবং তার মুসলিম ব্রাদারহুডের ১৪ নেতার বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের হত্যা করার জন্য সমর্থকদের উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে মুরসির মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। মুসলিম ব্রাদারহুডের সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির পক্ষে আইনি লড়াই করার জন্য দেশি বা বিদেশি কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হবে না। কারণ প্রেসিডেন্ট এই আদালত স্বীকার করেন না। তিনি সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের কোনো কর্মকাণ্ডই সমর্থনযোগ্য মনে করেন না। গত ৩ জুলাই সামরিক অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম মুরসিকে প্রকাশ্যে দেখা গেল। সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি সামরিক অভ্যুত্থানের পর মুরসিকে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে রেখেছিলেন। অভ্যুত্থানের পর হাজার হাজার ব্রাদারহুড কর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া সামরিক অভিযানে কয়েক শ’ ব্রাদারহুড নেতাকর্মী নিহত হয়। অনেকে মনে করছেন, এই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলে মিসরে নতুন করে সহিংসতা শুরু হবে।