১৫২ জনের ফাঁসি অবিচার ও আরেক নৃশংসতার পরিচয় : অ্যামনেস্টি
বিডিআর বিদ্রোহে হত্যা মামলার রায়ে ১৫২ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেয়াকে ‘অবিচার’ বলে আখ্যা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বুধবার মধ্যরাতে পাঠানো এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরের সদরদফতরে অনুষ্ঠিত বিদ্রোহে হত্যা মামলার ১৫২ আসামির বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেয়াকে ‘ন্যায়বিচারের পরিপন্থী’ বলেও মন্তব্য করেছে লন্ডনভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন।
সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের উপ-পরিচালক পলি ট্রাসকট বলেছেন, আজকের এই রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার তো প্রতিষ্ঠিত হয়ইনি, বরং অ্যামনেস্টি মনে করে এই ঘটনার দ্বারা ১৫২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলো। যেরকম মানবাধিকারের লঙ্ঘন হয়েছিল বিদ্রোহ মামলার বিচারের মাধ্যমে।
সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ‘অ্যামনেস্টি শুরু থেকেই ওই বিদ্রোহ এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে একটি স্বচ্ছ বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিল।’ ট্রাসকট বলেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, ২০০৯ সালের ওই ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত বর্বর, নৃশংস এবং গুরুতর। ওই সময় কেবল বহু মানুষকে হত্যাই নয়, বরং ওই ঘটনা পুরো বাংলাদেশে একটা বড় ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এই ঘটনার শাস্তি হিসেবে যদি অপরাধীদেরও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, তাহলে সেটি বস্তুত দুর্ভোগেরই নামান্তর। কেননা মৃত্যুদণ্ডের মধ্য দিয়ে কখনো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না।’ এই বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রচলিত আদালত বস্তুত দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার একটা সুযোগেরই অপব্যবহার করলো এবং হত্যার অভিযোগে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিয়ে আরেকটা নৃশংসতার পরিচয় দিলো বলেও মনে করে অ্যামনেস্টি। সংগঠনটি বলছে, মৃত্যুদণ্ড হচ্ছে চূড়ান্ত নৃশংসতা, অমানবিক ও ব্যক্তির প্রতি অসম্মান।