সৌদি আরবে হাজার হাজার অবৈধ বিদেশি শ্রমিক গ্রেফতার
সৌদি কর্তৃপক্ষ সারাদেশে অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার বিদেশি অবৈধ শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, সৌদি আরবের নাগরিকদের জন্য আরো বেশি চাকরির সুযোগ তৈরি করতে তারা এই ধড়পাকড় চালিয়েছে। সাত মাস আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল, সেখানে অবস্থানকারী বিদেশি অবৈধ শ্রমিকদের কাজ করার জন্য বৈধ কাগজপত্র তৈরি করতে হবে নতুবা তাদের দেশ ত্যাগ করতে হবে বা জেলে যেতে হবে। এ ঘোষণার পর গত সাত মাসে লাখ লাখ শ্রমিক সৌদি আরব ছেড়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
সৌদি সরকার আশা করছে, অবৈধ শ্রমিকের সংখ্যা কমে গেলে সেটা সৌদি আরবের নাগরিক যারা চাকরি খুঁজছেন তাদের জন্য আরো বেশি সুযোগ তৈরি করবে। সরকারি হিসাব মতে সৌদি আরবে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশ। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ৯০ লাখ বিদেশি শ্রমিক রয়েছেন, যাদের অধিকাংশই অদক্ষ শ্রমিক বা গৃহকর্মীর কাজ যেগুলো দেশটির নাগরিকেরা করতে চায় না সেসব কাজ করেন। সৌদি নাগরিকরা বেশির ভাগই সরকারি চাকরি বা ব্যবসা করেন।
স্থানীয় এক পত্রিকাকে পুলিশের মুখপাত্র নাওয়াফ আল-বুক বলেন, “সোমবার সকাল থেকেই পরিদর্শকেরা ধড়পাকড় কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যাপক নিরাপত্তা প্রচারাভিযান চালান।” পত্রিকাটিকে বুক আরো জানান, বন্দরনগরী জেদ্দা থেকে অন্ততপক্ষে ১৮৯৯ জন অবৈধ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর সামতা থেকে অন্ততপক্ষে ২২০০ জন, পূর্বাঞ্চল প্রদেশ থেকে ৩৭৯ জন এবং অন্যান্য শহর থেকে কয়েক হাজার সহ মোট ১৯হাজার অবৈধ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।
এসব শ্রমিক যারা যে কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় সৌদি আরবে প্রবেশ করেছেন কিন্তু ওই কোম্পানিতে কাজ না করায় তাদের ভিসা বাতিল হয়ে গেছে, তাদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাজার এবং আবাসিক এলাকায় হানা দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাজধানী রিয়াদে অভিযান চালাতে গিয়ে দেখা যায় বেশিরভাগ বিদেশি শ্রমিক সম্ভাব্য গ্রেফতার এড়াতে কাজে যোগ না দিয়ে বাড়িতেই অবস্থান করছেন। ফলে রিয়াদ প্রায় শ্রমিক শূন্য হয়ে পড়ে।অবৈধ এসব শ্রমিকদের অনেকেই প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র যেমন-পাসপোর্ট না থাকার কারণে সৌদি আরব ছাড়তে পারছেন না। আর এই শ্রমিকরাই তাদের নিজ নিজ দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রার মূল যোগানদাতা।