সরকারের কাছে গণতান্ত্রিক আচরণের প্রত্যাশা করে ‘শত নাগরিকের’ বিবৃতি
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মুক্তি ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে থেকে পুলিশ অপসারণের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সংগঠন ‘শত নাগরিক’।
শনিবার রাতে পাঠানো এ বিবৃতিতে গণতন্ত্রের যাত্রাকে চলমান রাখতে বিরোধী দলের প্রতি সরকারকে গণতান্ত্রিক আচরণেরও উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
শত নাগরিক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলসহ বিরোধী দলগুলো যখন আন্দোলনে নেমেছে সেই সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার তাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে স্বৈরশাসকদের মতো বেছে নিয়েছে দমন পীড়নের নিষ্ঠুর পথ। এর ফলে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা, অস্থিরতা ও হানাহানি। ভয়াবহভাবে উত্তপ্ত-সংঘাত-সংক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে দেশের রাজনীত। এই অবস্থায় অসত্য অজুহাতে দেশের বর্ষীয়ান জননেতাদের গ্রেফতার করে সরকার অগ্নিগর্ভ চুল্লিতে অনেকটা ঘি ঢেলে দিয়েছে। এর ফলে দেশের জনজীবন আজ যেমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তেমনি বিপন্ন হয়ে পড়েছে কষ্টার্জিত গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়ে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব যেমন হুমিকর মুখে পড়েছে তেমনি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে জাতীয় অর্থনীতি। আমরা সরকারের প্রতি হিংসাত্মক দমন নির্যাতনের পথ পরিহার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘‘এখনো সময় আছে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধার করা সম্ভব। এর জন্য শুধু দরকার সরকারের পূর্ণ সদিচ্ছা। সরকার যদি সত্যিকারের দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়ে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে এগিয়ে আসে তাহলে আমরা আশা করি বিরোধী দলগুলো তাতে সাড়া দেবে। কিন্তু তা না করে সরকার যদি তাদের বর্তমান হয়রানী ও আগ্রাসী ভূমিকা বজায় রাখে তাহলে দেশজুড়ে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তার সকল দায়ে সরকারের ওপরেই বর্তাবে।”
বিবৃতিতে আরো বলা করা হয়, “আমরা অবিলম্বে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও শিমুল বিশ্বাসসহ নির্দলীয় সকারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের মুক্তি দাবি করছি। পাশাপাশি বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তার বাসগৃহের চারপশে যে পুলিশি বেড়াজাল ও নিষেধাজ্ঞা তৈরি করা হয়েছে তার অপসারণ দাবি করছি। আমরা হিংসা, ঘৃণা, বিদ্বেষ ও সংঘাত হানাহানির বিরুদ্ধে। সে জন্য সবসময়ই একটি সুখী সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভবিষ্যত যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করার জন্য সরকারের কাছে প্রত্যাশা করছি শুভ বুদ্ধি। সকলের মধ্যে সবার বড় হয়ে উঠুক দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।”
বিবৃতিদাতারা হলেন- প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদ, বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ, ড. মাহবুব উল্লাহ, মোহাম্মদ আসাফউদদৌলা, ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর মনিরুজ্জামান মিয়া, ড. তালুকদার মনিরুজ্জামান, শফিক রেহমান, মাহফুজ উল্লাহ, ড. পিয়াস করিম, ড. মুশতাহিদুর রহমান, ড. জিন্নাতুননেসা তাহমিদা খাতুন, এ্যাডভোকেট মাহবুব হোসেন, রুহুল আমিন গাজী, ডা, এসএম জাফরুল্লাহ, ড. সদরুল আমিন, ড. ইউসুফ হায়দার, সৈয়দ কামাল উদ্দীন, কামাল উদ্দিন সবুজ, কবি আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ আবদাল আহমদ, তাজমেরী এস ইসলাম, ড. আতহার আলী, ড. তাহমিনা ইসলাম টফি, ড. দিল রওশন জিনাত আরা নাজনীন, চাষী নজরুল ইসলাম, ড. শাহেদা রফিক, ড, সুকোমল বড়ুয়া, ড. মামুন আহমেদ প্রমুখ।