নিজামীর মামলার রায় যে কোনো দিন
জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় যে কোনো দিন। বুধবার বিচারপতি এ টিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রথম ট্রাইব্যুনাল আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক ক্লোজ করে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখার আদেশ দেন। একই সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষকে তাদের আইনি যুক্তি (আর্গুমেন্ট) লিখিত আকারে আগামী ৫দিনের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দেন।
হরতালের কারণে পর পর চারদিন নিজামীর সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামের ট্রাইব্যুনালে অনুপস্থিত থেকে বুধবারও আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেননি। এ কারণে মঙ্গলবারের দেওয়া আদেশ অনুসারে মামলার সর্বশেষ ধাপ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সমাপ্ত ঘোষণা করে যেকোনো দিন রায় দেওয়া হবে বলে জানান চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। তবে আসামিপক্ষকে তাদের লিখিত যুক্তিতর্ক ৫ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবারও চতুর্থ দিনের মতো অনুপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। হরতালে নিরাপত্তাহীনতা ও মিজানুল ইসলামের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে দ্বিতীয় দিনের যু্ক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন আবারো পেছানোর আবেদন জানান তার জুনিয়র অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন।
কিন্তু ট্রাইব্যুনাল আর সময় না দিয়ে নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ঘোষণা দিয়ে আইন অনুসারে রায়ের দিন অপেক্ষমান রাখেন।
এর আগে ৩ থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৪ কার্যদিবসে নিজামীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও মোহাম্মদ আলী। আর গত ৭ নভেম্বর নিজামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী মিজানুল ইসলাম।
নিজামীর পক্ষে গত ২১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৪ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন, অ্যাডভোকেট কে এম হামিদুর রহমান, মো: শামসুল আলম, আবদুস সালাম মুকুল এবং নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার মো: নাজিবুর রহমান ওরফে নাজিব মোমেন। তাদেরকে জেরা করেছেন প্রসিকিউশন।
অন্যদিকে নিজামীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ আগস্ট থেকে গত ৭ অক্টোবর পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খানসহ ২৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে ৭ম সাক্ষী প্রদীপ কুমার দেবকে বৈরি ঘোষণা করে তাকে জেরা করেছেন প্রসিকিউশন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগ এনে নিজামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়। তার বিরুদ্ধে ১৬টি ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।