কুরআন-হাদিসের মৌলিক বিষয় আলোচনা ওলামায়ে কেরামের ঈমানি দায়িত্ব : আল্লামা আহমদ শফী
ওমরাহ পালন শেষে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী দেশে ফিরেছেন। গত বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হাটহাজারী মাদরাসায় পৌঁছে ফজরের নামাজ আদায় করেন। রাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মহানগর হেফাজতের নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। ৪ জুলাই ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব গমনের দুই সপ্তাহ পর তিনি দেশে ফিরলেন। জুমার দিন হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাক্ষাতে আসা সুধীজনদের সাথে কুশল বিনিময়ের সময় হেফাজত আমির বলেন, কুরআন-হাদিসের মৌলিক বিষয়গুলো আলোচনা করা ওলামায়ে কেরামের ঈমানি দায়িত্ব। নারীদের কল্যাণে কুরআন যা বলেছে, ইসলাম যা দিয়েছে তা তাদের অধিকার, ইজ্জত-সমভ্রমকে রক্ষার মাধ্যমে সম্মানিত করেছে। বর্তমানে যেভাবে নারীরা অধিকার হরণের শিকার হচ্ছেন কেবল ইসলামই তাদের এ থেকে পুনঃরুদ্ধার করে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে পারে। তিনি আরো বলেন, সে কারণেই হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার চতুর্থ দফায় আমরা স্পষ্টভাবে নারীদের বিষয়ে দাবি পেশ করেছি। সেখানে আমরা বলেছি, ‘দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ ল্েয তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ ও হিজাব পালনে উদ্বুদ্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এবং একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সকল প্রকার বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার সহিংসতা, যৌতুকপ্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।’ সরকার সত্যিকারভাবে নারীদের অধিকার রক্ষায় আন্তরিক হলে হেফাজতের দাবিকে মেনে নিতে হবে। কিন্তু তা না করে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে কোনো ফায়দা হবে না। হেফাজতের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহম্মদ জানান, সুধীজনদের সাথে সাক্ষাতের সময় হেফাজত আমির দেশের বাইরে বিশেষ করে পবিত্র মক্কা ও মদিনা শরিফে হেফাজতের আন্দোলনের প্রতি মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া রয়েছে তাও তুলে ধরেন। প্রেসসচিব আরো জানান, মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর রওজা শরিফ জিয়ারত শেষে হেফাজত আমির সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি শায়েখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়েখের সাথে তিনি সাাতে মিলিত হন। আলে শায়েখ সৌদি সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ সভাপতি এবং আরাফাতের ময়দানে হজের দিনের খতিব ও ইমাম। রিয়াদের নদওয়ায় শূরা কাউন্সিলের প্রতিনিধির সাথেও আল্লামা আহমদ শফীর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মক্কা, মদিনা, রিয়াদ ও জেদ্দায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের বেশ কিছু কর্মসূচিতে আল্লামা শফী যোগদান করেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি, তৌহিদি জনতার ঈমানি আন্দোলন, ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদ চক্রের নানাবিধ অপতৎপরতা প্রসঙ্গে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে মতবিনিময় করেন। আল্লামা শফীর সফরসঙ্গী শায়েখ আনাস মাদানী, মাওলানা হাফেজ মুজ্জাম্মিল, মাওলানা শফী ছাড়াও সৌদি প্রবাসী বিশিষ্ট ওলামা-মাশায়েখরা তার সাথে এসব কর্মসূচিতে শরিক হন। হেফাজতে ইসলাম মদিনা শাখার সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, রিয়াদ শাখার সভাপতি মাওলানা হেলালুদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রেজাউল করিমসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী তার সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদি আরবের বিভিন্ন নগরীতে হওয়া কর্মসূচিতে অংশ নেন।