গোলাম আযম ও মুজাহিদের রায়ের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে স্মারকলিপি ও বিক্ষোভ
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে জাতিসংঘের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশী আমেরিবকান এসোসিয়েশন। গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একই দাবিতে বিক্ষোভ শেষে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি।
বিক্ষোভ থেকে বক্তারা অধ্যাপক গোলাম আযমের ৯০ বছর কারাদন্ড ও আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসির রায় নিয়ে বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইসলামী চিন্তাবিদ ও প্রখ্যাত আলেমদের হত্যার নীল নকশা করেছে সরকার। কোন প্রকার প্রমাণ ছাড়া মানুষের আবেগ পুঁজি করে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে একটার পর একটা রায় দিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, রায়ের আগে এবং পরে সরকারের মন্ত্রীদের মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে মানবতাবিরোধী নামে তথাকথিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে যাবে।
বক্তারা আরো বলেন, ট্রাইব্যুনাল নিজেই বলেছে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা ও ধষর্ণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে সুপিরিয়র রেসপনসিবেলিটি হিসেবে তার বিরুদ্ধে ৯০ বছর কারাদ- দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অথচ মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি হত্যা ধর্ষণে অংশ নেয়া পাকিস্তানী কোন সৈন্যকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারেনি সরকার।
তারা বলেন, প্রসিকিউশন অধ্যাপক আযমের বিরুদ্ধে আনীত ৬১টি অভিযোগের একটিও প্রমাণ করতে পারেননি। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাও ১৯৭১ সালে অধ্যাপক আযমের বক্তৃতা-বিবৃতি শুনে কেউ কোন অপরাধ সংঘটন করেছে মর্মে আদালতে হাজির করতে পারেনি। এতে সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ হয় যে, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার সাথে গোলাম আযমের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই।
বক্তারা বলেন, আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদ আল-বদর, শান্তি কমিটি, রাজাকার, আশ-শামস বা এই ধরনের কোন সহযোগী বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, এমন কোন তথ্য তিনি তার তদন্তকালে পাননি। তারপরও ট্রাইব্যুনাল তাকে আল-বদর বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করে হাস্যকরভাবে মুজাহিদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বক্তারা বলেন, সময় থাকতে গোলাম আযম ও আলী আহসান মুজাহিদসহ তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আটককৃত জামায়াত নেতাদের মুক্তি দিন। অন্যথায় মহাজোট সরকারকেই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য একটি কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বিক্ষোভে মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা এডভোকেট কাইয়ুম চৌধুরী, ক্যাবী সোসাইটির সভাপতি ড. আজিজুল্লাহ, রাইটার্স ফোরাম অব নর্থ আমেরিকার সভাপতির আব্দুল্লাহ আল আরিফ, ওলামা কমিটির সদস্য মাওলানা শিহাব উদ্দিন,
মাওলানা নায়েব আলী, ওমেন্স এসোয়েশনের সভাপতি শাহানা মাসুম ও আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন প্রোগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।